শীতের সময়ে কেমন হবে বয়স্কদের ডায়েট? প্রতীকী ছবি।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন আসে আমাদের চেহারায় এবং মনে। অনেক সময় নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা ঘিরে ধরে। কিন্তু নিয়মমাফিক চললে অনেক রোগবালাই থেকে দূরে থাকা সম্ভব। শীত আসছে। এই সময়ে বাড়ির প্রবীণ সদস্যদের দিকে একটু বেশিই নজর দিতে হবে। ঋতু বদলের এই সময়টাতেই জ্বর, সর্দিকাশি, অ্যালার্জির সমস্যা, হাঁপানির টান বাড়ে। সিওপিডি থাকলে তা-ও বাড়তে পারে। কাজেই নিয়ম মেনে চলা ও খাওয়াদাওয়ায় নজর দেওয়া খুব জরুরি।
একজন ষাটোর্ধ্ব প্রবীণা সংসার সামলাতে গিয়ে, নিজের প্রতি দায়িত্ব নেন না। আবার বাড়ির সকলে যে যাঁর কাজে ব্যস্ত হওয়ায় অধিকাংশ দিনই হয়তো ঠিক মতো তিনি খাবার খান না। আবার ষাটোর্ধ্ব একজন পুরুষের বয়সকালে পৌঁছে ডায়েট মেনে চলার কথা মনে থাকে না। হয়তো বাড়ির সকলের আড়ালেই তিনি দেদার মিষ্টি খেয়ে ফেলেন অথবা বাইরে বেরিয়ে শিঙাড়া, কচুরি খেয়ে আসেন। বয়সে সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় ‘ইটিং ডিজ়অর্ডার’। অনেকের যেমন খাবারে অনীহা তৈরি হয়, তেমনই অনেকের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নেওয়ার প্রবণতাও দেখা যায়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটখারাপ, গাঁটে গাঁটে ব্যথা আরও বেড়ে যায়।
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, প্রবীণদের খাবারে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সঠিক মাত্রায় রাখতে হবে। প্রাতরাশ খেয়ে নিতে হবে সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে। প্রাতরাশে খেতে পারেন দুধ-কর্নফ্লেক্স, অথবা এক বাটি ডালিয়ার খিচুড়ি, না হলে সব্জি দিয়ে ওট্স। দুধ হজম না হলে হাতে গড়া দু’টি গরম রুটি আর এক বাটি সব্জি খান। সঙ্গে যে কোনও একটি মরসুমি ফল। চিবিয়ে খেতে সমস্যা হলে ফলের রস করে খেতে পারেন।
পাতলা ঝোল ভাল না লাগলে উপরে ছড়িয়ে দিন গোলমরিচের গুঁড়ো, লেবুর রস, ধনেপাতা, পার্সলে কুচি বা কারিপাতা। স্বাদ নিমেষে বদলে যাবে। তেল যতটা সম্ভব কম খাওয়া যায়, ততই ভাল। খাবার পাতে কাঁচা নুন একদমই চলবে না। রান্নায় চিনির মাত্রা কমাতে হবে। প্রোটিনের জন্য ডিম, সয়াবিন, পনির বা চর্বি ছাড়া মাংস, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের জন্য বিভিন্ন রকম বাদাম, শুকনো ফল রাখতে হবে ডায়েটে। খাওয়ার পরে টক দই খেতে পারেন।
বয়স্কদের দিনে যে কোনও দু’রকম প্রাণিজ প্রোটিন দিন। ডিম খেয়ে হজম না হলে, ডিমের কেবল সাদা অংশটি দিন। হজমের সমস্যা থাকলে মাংসের থেকে মাছ খাওয়া ভাল। সব রকম ডাল ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেতে হবে। সবুজ শাকসব্জি বেশি খেতে হবে। বয়স হলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। তাই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। দিনে একটি-দু’টি খেজুর খেলে উপকার পাওয়া যাবে।