ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমিয়ে দিতে পারে ঘি। ছবি: সংগৃহীত।
ভাতে কার্বোহাড্রেটের পরিমাণ বেশি। তাই আগে একটা সময়ে ডায়াবিটিস রোগীরা ভাতের বদলে রুটি খেতেন। কিন্তু, আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র সেই নিয়মে সায় দিচ্ছে না। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাত হোক বা রুটি— তার মধ্যে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ প্রায় একই রকম। এমনকি মুড়ি, চিঁড়ে, ছাতু, সুজি, ডালিয়া কিংবা মিলেটজাতীয় খাবারের পুষ্টিগুণে অন্যান্য উপাদানে হেরফের হলেও কার্বোহাইড্রেটের মাত্রায় খুব বেশি অদলবদল নজর করা যায় না। তবে ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেস্ক বেশি।
সেই কথা মাথায় রেখেই অন্যান্য খাবার, মানে ডাল, সব্জি, তরকারি কিংবা মাছ-মাংসের সঙ্গে এক কাপ বা ছোট এক বাটি ভাত খেতে বলেন পুষ্টিবিদেরা। কিন্তু খাদ্যরসিকদের কাছে ভাত মেপে খাওয়ার দুঃখ অসীম। এক বাটি ভাত তো চোখের পলক ফেলতেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু অন্য পদগুলি তো ভাত ছাড়া খাওয়া যাবে না। তা হলে কী করবেন?
ভাত খাওয়ার পরেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তবে, এই সমস্যা বশে রাখতে ভাতের সঙ্গে সামান্য ঘি মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ঘিয়ের মধ্যে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড। যা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার পরিপাকের গতি শ্লথ করে দিতে পারে। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে। অনেকেই মনে করেন, ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমিয়ে দিতে পারে ঘি। ঘিয়ের মধ্যে রয়েছে ফ্যাট-সলিউব্ল বেশ কয়েকটি ভিটামিন। তা ছাড়া ঘি অন্ত্রের জন্যেও ভাল। অনেকেই হয়তো জানেন, অন্ত্রের সঙ্গে বিপাকহারের যোগ রয়েছে। পরোক্ষ ভাবে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই উপাদানটি।
তবে এই টোটকা সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিসের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা এই ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা করতে যাবেন না। রক্তে শর্করা স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য বেশি (বর্ডার লাইন) হলে এই ধরনের টোটকা করা যেতেই পারে। যাঁদের হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা কিংবা রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে, তাঁদেরও এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
ঘি খাওয়া ভাল। তাই বলে সব রান্নাতেই ঘিয়ের ব্যবহার কিংবা ভাতের সঙ্গে পরিমাণে অনেকটা ঘি খেয়ে ফেলাও কিন্তু ঠিক নয়। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এক কাপ ভাতের সঙ্গে এক চা চামচ পরিমাণ ঘি খাওয়াই যথেষ্ট।