কোলেস্টেরল বাড়লে পায়ের কী কী সমস্যা হতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক।
গত কয়েক বছরে হার্ট অ্যাটাকের গড় বয়স চল্লিশে নেমে এসেছে। আরও মুশকিল হল, যুবক-যুবতীদের মধ্যে অনেকেই হৃদ্রোগের আগাম লক্ষণ ধরতে পারছেন না। ফলে তাঁদের মধ্যে অনেকেই অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যত নষ্টের গোড়া হল কোলেস্টেরল। এটি রক্তে বাড়তে থাকলে দুর্বল হয়ে পড়ে হৃদয়।
কখন যে তলে তলে হৃদ্রোগ বাসা বেঁধে ফেলে, তা ধরতেই বহু সময় পেরিয়ে যায়। কোলেস্টেরলের আবার ভাল ও মন্দ দুই-ই আছে। মন্দ কোলেস্টেরলের ফাঁদে পড়লেই হার্টের মতিগতি বদলে যায়। বিগড়ে যায় তার ছন্দ। তাই কোলেস্টেরলকে বাগে আনাই দরকার। কিন্তু সমস্যাটা হল, কোলেস্টেরল বাড়ছে কি না, তা ধরা যায় না চট করে। তবে পায়ের এমন কিছু সমস্যা দেখা দিতে থাকে, যা কোলেস্টেরল বৃদ্ধির আগাম লক্ষণ হতে পারে।
১. রাতে ঘুমিয়ে সকালে উঠে হয়তো দেখলেন পায়ের পাতা অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে গিয়েছে। অথচ পায়ে কোনও আঘাত লাগেনি। কী কারণে পা ফুলল, তা ধরতেই পারলেন না আপনি। অনেকে হয়তো ভেবে বসেন, ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গিয়েছে। আসলে কারণটা তা না-ও হতে পারে। পায়ের পাতা ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি আনুষঙ্গিক আরও কিছু লক্ষণও দেখা দিতে থাকে।
২. পায়ের রক্তনালিতে জমে যায় কোলেস্টেরল। ফলে পায়ে ঠিক মতো রক্ত চলাচল বন্ধ হয়। পায়ে চিনচিনে ব্যথা হতে শুরু করে। সেই সঙ্গেই পা ও পায়ের পাতা অবশ হয়ে যায় অনেকের। আপনি হয়তো দেখলেন, কিছু ক্ষণ বসে থাকার পরে উঠে আর হাঁটতে পারছেন না। পা ও পায়ের পাতা একেবারে অবশ হয়ে গিয়েছে। চিমটি কাটলেও কোনও সাড় নেই। আবার একই জিনিস হতে পারে রাতে ঘুমোবারও সময়েও। দিনের পর দিন যদি এমন সমস্যা চলতে থাকে, তা হলে সেটি ভাল লক্ষণ নয়।
৩. পায়ের পেশিতে টান ধরতে পারে যখন তখন। পায়ের পাতার নীচে জ্বালা ভাব হতে পারে। রক্তে কোলেস্টেরল বাড়লে পায়ের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন পায়ে টান ধরা, পায়ের আঙুল ফুলে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে থাকে।
৪. রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে রাতের দিকে পা ক্রমাগত ঠান্ডা হতে থাকে। শীত হোক বা গরম বা বর্ষা, সব ঋতুতেই রাতের দিকে পা ঠান্ডা হয়ে এলে এবং এটি রোজ হতে থাকলে সাবধান হওয়া দরকার।
৫. খেয়াল করবেন, একটু হাঁটাচলা করলে বা একটু বেশি কাজ করলেই হাঁফিয়ে পড়ছেন। হাঁফিয়ে পড়ার অবশ্য আরও বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তাই খুব ভাল হয়, যদি দেরি না করে রক্তপরীক্ষা করিয়ে নেন।
রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে। পাশাপাশি রোজের জীবনযাপনেও কিছু বদল আনা দরকার। যেমন, মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। সম্ভব হলে ধূমপান ছেড়ে দিন। শরীরচর্চা করতে হবে নিয়মিত। বাইরের খাওয়া, বেশি তেলমশলা দেওয়া খাবার খেলে চলবে না। সবুজ শাকসব্জি, ফল বেশি করে খেতে হবে। মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়াও কমাতে হবে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েট কেমন হবে, তা অবশ্যই পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নেবেন। নিজের মতো করে ডায়েট বানিয়ে নিলে তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।