নিয়মিত ধ্যান করার উপকারিতা অনেক। ছবি: সংগৃহীত।
মন সব সময়ই অস্থির। চঞ্চল। কাজের যা চাপ, তাতে আর মন শান্ত থাকে না। রোজ ঘুম থেকে ওঠার পরেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়। দিনভর সেই চিন্তা আরও বাড়ে।
দিনের শেষে দেখা যায়, পাহাড়প্রমাণ চাপ জমেছে মন আর মস্তিষ্কে। মানসিক চাপ যত বাড়ে ততই ঘন ঘন বদলে যেতে থাকে মেজাজ। আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে।
ঘুমোতে গেলেই চিন্তাভাবনারা জট পাকায় মস্তিষ্কে। ফলে ঘুমেরও দফারফা হয়। মনের চাপ যদি কমাতে হয়, মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়, তা হলে প্রতি দিন দশ থেকে পনেরো মিনিট করে মেডিটেশন বা ধ্যান করা খুব জরুরি। দেখবেন সপ্তাহ খানেক বাদে অনেকটাই ফল পাচ্ছেন।
ধ্যান করা কেন জরুরি?
মেডিটেশন হল মনের ব্যায়াম। মনকে একাগ্র করতে, মনঃসংযোগ বাড়াতে এবং অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা কমাতে ধ্যান করা খুব জরুরি। এতে ধৈর্য আর আত্মবিশ্বাসও বাড়ে। অস্থির মন সুস্থির হয়।
কিছুটা সময় কাজ, সমাজ আর সংসারের সব জটিল বিষয়গুলিকে সরিয়ে রাখলে, নিজের সঙ্গেও একাত্ম হওয়া যায়। ফলে ভাবনাচিন্তার নতুন পথ খুলে যায়। যে সমস্যা নিয়ে চিন্তিত, তার সমাধানের পথও খুঁজে পেতে পারেন নিয়মিত ধ্যান করলে। কারণ ভাবনার পথ স্বচ্ছ হলে, ভুলভ্রান্তিগুলি ধরাও পড়ে সহজে। আর তার থেকে বেরিয়ে আসার পথের হদিসও পাওয়া যায়।
ধ্যানের সহজ নিয়ম
১. নিরিবিলি-শান্ত জায়গা খুঁজে নিন। হাওয়া-বাতাস চলাচল করে এমন জায়গা হলে ভাল হয়।
২. যে আসনে বসে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন সে রকম জায়গা বেছে নিন। বজ্রাসন বা সুখাসনে বসে মেডিটেশন করতে পারেন।
৩. ধ্যান করতে বসার সময়ে মনে রাখতে হবে, পোশাক যেন হালকা হয়। শরীরে অস্বস্তি হলে মনোযোগ দিতে সমস্যা হবে।
৪. চোখ বুজে, ধ্যানাসনে বসে দীর্ঘ ক্ষণ মন শান্ত রাখাটা সহজ নয়। যদি মনে করেন, ধ্যান করলে এক দিনেই মন একাগ্র হবে, তা কিন্তু নয়। নিয়মিত অভ্যাস প্রয়োজন৷ তাই রোজ ধৈর্য ধরে অভ্যাস করলে তবেই ফল পাওয়া যাবে।
কখন করবেন ধ্যান?
সময় নিয়ে অনেকেই একটু অস্বস্তিতে থাকেন। সকাল, সন্ধে বা রাতে যে কোনও সময়েই ধ্যান করতে পারেন। এমন জায়গা বেছে নেবেন, যেখানে কোলাহল নেই। ধ্যান কতটা করবেন, সেটি সবটাই নির্ভর করছে আপনার উপর। শুরুতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্থির ভাবে বসে দেখুন। তার পর সময় বাড়াতে পারেন। জোর করে মন শান্ত করার চেষ্টা করবেন না। তবে মন বসছে না, এই কথা বার বার ভাবলে মন আরও বেশি চঞ্চল হবে। শুধু নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের দিকে নজর রাখুন ও চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণে আনুন৷ যদি মন খুব চঞ্চল থাকে, তা হলে আগে কিছু যোগব্যায়াম, নিঃশ্বাসের ব্যায়াম করে নিতে পারেন। তার পর স্থির হয়ে বসুন। এতে অস্থিরতা কমে যাবে অল্প ক্ষণেই।