ভারী খাবার খাওয়ার পর কফি খেলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। প্রতীকী ছবি।
সকালে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে যদি কফির কাপে চুমুক দেওয়া যায়, তার চেয়ে ভাল কিছু আর হতে পারে না। মন এবং মেজাজ হয়তো এর ফলে ফুরফুরে হয়ে যায়, কিন্তু শরীরের পক্ষে কি এই অভ্যাস আদৌ স্বাস্থ্যকর?চিকিৎসকেরা কিন্তু জানাচ্ছেন, খালি পেটে কফি খাওয়ার অভ্যাস একেবারেই ভাল নয়। এতে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কফি শরীর এবং মন চনমনে এবং চাঙ্গা রাখে। কিন্তু কফি খাওয়ারও নির্দিষ্ট একটি সময় আছে। যখন তখন কফি খাওয়া ঠিক নয়। ভারী খাবার খাওয়ার পর কফি খেলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু খালি পেটে কফি নৈব নৈব চ। কী কী সমস্যা হতে পারে এর ফলে?
পেটের গোলমাল
খালি পেটে কফি খেলেই হজমশক্তি নষ্ট হতে পারে। হজমজনিত সমস্যার ঝুঁকি থাকে। দীর্ঘ দিনের এই অভ্যাসে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হয়ে যেতে পারে। কারণ, খালি পেটে কফি খেলে শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। ফলে মলত্যাগের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
মানসিক চাপ
ঘুম থেকে উঠলেই শরীরে কর্টিসোল হরমোন উৎপাদনের হার বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, খালি পেটে একটু বেশি মাত্রায় কফি খেলেই কর্টিসোল হরমোনের ক্ষরণ আরও বৃদ্ধি পায়। এতেই ঘটে বিপত্তি। মানসিক চাপের কারণ হল এই হরমোন। ফলে সকালে উঠেই দু’তিন কাপ কফি খেয়ে ফেললে মন ভাল হওয়ার বদলে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়।
ডায়াবিটিসের ঝুঁকি
শরীরে স্বাভাবিক মাত্রায় কর্টিসোল ক্ষরণ বিপাকহার, রক্তচাপ আর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে অত্যধিক মাত্রায় এর ক্ষরণ হাড়ের ক্ষতি করে। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ২ ডায়াবিটিসের আশঙ্কাও থাকে। ফলে ডায়াবিটিসের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের খালি পেটে কফি না খাওয়াই শ্রেয়। ডায়াবিটিসের আশঙ্কা ছাড়াও হৃদ্রোগের ঝুঁকিও এর ফলে বৃদ্ধি পায়।
শরীরে জলের ঘাটতি
কফিতে থাকা ক্যাফিন খুব সাময়িক ভাবে শক্তির জোগান দিতে পারে। তবে ক্যাফিন নামক পদার্থটি শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি করে। সকালে খালি পেটে কফি খেলে ‘ডিহাইড্রেশন’-এর মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। গ্রীষ্মের দিনে এই অভ্যাস শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে দিতে পারে। এর ফলে মাথা ঘুরতে পারে। এ ছাড়া পেশি শক্ত হয়ে যেতে পারে এবং অতিরিক্ত ক্লান্তও হয়ে পড়তে পারেন এর কারণে।