শিশুর শরীরে ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলি জানা আছে কি? ছবি: সংগৃহীত।
শরীর পর্যাপ্ত মাত্রায় জল না পেলে ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কা তৈরি হয়। তীব্র গরমের জেরে অত্যধিক ঘাম, বমি বা ডায়েরিয়ার মতো রোগ হলে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে জল বেরিয়ে যায়। তখন কিন্তু শরীর নানা ইঙ্গিত দিয়ে বোঝায় যে, ডিহাইড্রেশনে ভুগছেন আপনি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আমরা সেগুলি বুঝতে পারি না। শিশুদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়ে। মূলত তিন ধরনের ডিহাইড্রেশন হয়, হাইপোটনিক (শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি হয়), হাইপারটনিক (শরীরে জলের ঘাটতি হয়) আর আইসোটনিক (শরীরে জল ও ইলেক্ট্রোলাইট, দুইয়ের ঘাটতি হয়)।
গরমে শিশুদের, বিশেষ করে ৩-৪ বছর বয়সিদের খাবার হজম করতে অসুবিধা হয়, তারা পেটের নানা রকম সংক্রমণে ভোগে। সেই থেকেও হতে পারে ডিহাইড্রেশন। পেটের সংক্রমণ থেকে বমি ও ডায়েরিয়া শুরু হয়। ফলস্বরূপ শরীরে জল এবং প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইট, যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইডের ঘাটতি হয়।
শিশুদের ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ কী?
১) শিশুর শরীরে জলের ঘাটতি হলে ঠোঁট ও মুখের চারপাশটা শুকিয়ে যায়। সে দিকে নজর রাখুন।
২) শিশু কান্নার সময়ে চোখ দিয়ে বেশি জল পড়ছে না? এ কিন্তু ডিহাইড্রেশনের একটা বড় চিহ্ন।
৩) গরমের দিনগুলিতে খুদের প্রস্রাবের দিকেও নজর রাখা জরুরি। শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিলে তার প্রস্রাব হলুদ রঙের হবে। শিশু যদি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর প্রস্রাব না করে, তা হলেও বুঝবেন তার শরীরে জলের ঘাটতি হয়েছে।
৪) ডিহাইড্রেশন হলে শিশুরা সারা ক্ষণ ঝিমিয়ে থাকে। খেলাধুলা না করে দিনের বেশির ভাগ সময়েই সে ঘুমিয়ে থাকতে চায়। এই প্রবণতা দেখা দিলে এখনই সতর্ক হোন।
৫) শিশুর শরীরে জলের ঘাটতি হলে তার মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে। শিশু সব সময়ে ঘ্যানঘ্যান করলে বা কান্নাকাটি করলে হতে পারে তার ডিহাইড্রেশন হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে কী করণীয়?
শিশুর শরীরে এই লক্ষণগুলি দেখা গেলেই আপনাকে সতর্ক হতে হবে। শিশুর যেন পর্যাপ্ত মাত্রায় জল খায়, সে দিকে নজর দিন। এক বোতল জলে এক প্যাকেট ওআরএস গুলে রাখুন। মাঝেমাঝেই সেই জল শিশুকে খাওয়াতে থাকুন। যদি দেখেন, শিশু যে মাত্রায় জল খাচ্ছে তার বেশি পরিমাণ জল শরীর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, তা হলে কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই ওষুধ খাওয়ার পরেও বমি বন্ধ হয় না, সে ক্ষেত্রে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হতে পারে ইনট্রাভেনাস রিহাইড্রেশনের জন্য।