রজোঃনিবৃত্তির সময় একাধিক বদল আসে শরীর ও মনে। ছবি: সংগৃহীত।
রজোঃনিবৃত্তির পর্যায়টা খুবই কঠিন। ঋতুচক্র শুরুর যেমন নির্দিষ্ট সময় আছে, তেমনই ঋতুবন্ধও হয় সময় ধরেই। কারও কিছুটা আগে, কারও পরে। ঋতুচক্র হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় না, বরং এই পর্বটা আসে ধীরে-ধীরে। আর রজোঃনিবৃত্তির এই পর্বটাতেই মহিলাদের শরীরে ও মনে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। ঘন ঘন বদলে যেতে থাকে মেজাজ। হরমোনের ওঠানামা ভিন্ন-ভিন্ন ভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে থাকে। চিকিৎসার ভাষায় এই পর্যায়কেই বলে ‘পেরিমেনোপজ’ যার মুখোমুখি হতে হবে সব মেয়েকেই। এই সময়ের ধাক্কাটা প্রবল, সেটা কীভাবে সামলানো যায় তার টিপস দিয়েছেন টিভি তারকা মিনি মাথুর।
রজোঃনিবৃত্তির পর্বে কী কী ধরনের সমস্যায় ভুগতে হয়েছিল, তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন মিনি। তিনিই জানান, ধতুবন্ধ আসার আগের মাসগুলোতে ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়ে গিয়েছিল তাঁর। হরমোনের ভারসাম্য ঠিক না থাকায় ঘন-ঘন মেজাজ বদলে যেত। আচমকাই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ত মন। বারে বারে বেগ আসত প্রস্রাবের। রাতবিরেতে ঘাম হত দরদর করে। ঘুম আসতেই চাইত না। মিনি জানিয়েছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই পর্বের সমস্যাগুলো তিনি কাটিয়ে উঠেছিলেন।
প্রতিদিনের রুটিনে কী-কী যোগ করলে ঋতুবন্ধের আগের ধাক্কা সামলানো যাবে?
১) আপনার যদি ধূমপান করার অভ্যাস থাকে, তা অবিলম্বে ত্যাগ করতে হবে। সিগারেটে থাকা নিকোটিন, ঋতুবন্ধের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। মদ্যপান কমিয়ে দেওয়াই ভাল।
২) মিষ্টি জাতীয় খাবার একেবারে এড়িয়ে চলা উচিত। এই সময়টাতে হজমের গোলমাল বেশি হয়। বমিভাব থাকে। তাই শর্করা জাতীয় খাবার, বেশি ভাজাভুজি, তেলমশলাদার খাবার না খাওয়াই ভাল।
৩) বাড়ি এবং বাড়ির বাইরে যতই কাজ থাকুক, শরীরচর্চা বন্ধ করা যাবে না। এই সময়ে মানসিক নানা পরিবর্তনের সঙ্গে শারীরিক পরিবর্তনও হতে থাকে। সবচেয়ে বেশি হয় হাড়ের ক্ষয়।
৪) স্বাস্থ্যকর খাদ্য শরীর এবং মস্তিষ্ককে সারা দিনের জন্য শক্তি সরবরাহ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে যাওয়া জরুরি। তৈলাক্ত বড় মাছ ঋতুবন্ধের সময়ে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও এই ধরনের খাবার জরুরি।
৫) কফি খাওয়ার অভ্যাসে লাগাম পরাতে হবে। কারণ কফিতে থাকা ক্যাফিন ‘হট ফ্লাশ’-এর প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে। দিনভর গা-জ্বালা ভাব, পেটে ব্যথা, নানা কারণে শরীরে প্রদাহ হতে পারে এই সময়। তাই চা-কফি যত কম খাওয়া যায় ততই ভাল।
৬) এই সময়ে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমতে থাকায়, যৌনাঙ্গ অতিরিক্ত স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে। চিকিৎসকেরা যৌনাঙ্গে ইস্ট্রোজেনযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে পরামর্শ দেন।
৭) সবুজ শাকসব্জি, ফল, মাছ, দুধ, ডিম পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। চেষ্টা করতে হবে সিদ্ধ বা কম তেলে রান্না করা খাবার খাওয়ার।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। আপনার রজোঃনিবৃত্তিরসময় এসে গিয়েছে কিনা আর এলে সেই সময় কী করা উচিত, ডায়েট কেমন হবে, তা চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের কাছ থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।