অ্যান্ড্রোপজ পুরুষদের অনেক শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটায়। ছবি- সংগৃহীত
‘মেনোপজ’ বা ঋতুবন্ধ শব্দটা শুনলেই মাথায় আসে মহিলাদের কথা! তবে পুরুষেরও যে ‘মেনোপজ’ হয়, সেটা অনেকেরই অজানা।
সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সি কোনও মহিলার টানা এক বছর পিরিয়ড না হলে চিকিৎসকরা ধরে নেন তাঁর ঋতুবন্ধ হয়ে গিয়েছে। ডিম্বাশয় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনও হয় এই সময়টায়। শুধু মহিলারাই নন, ৩০ বছরের পর থেকে প্রতি বছর বাড়তি বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরন ক্ষরণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এবং একটা সময় পুরুষদেরও জীবনে আসে ‘মেনোপজ’, যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় অ্যান্ড্রোপজ বলা হয়। ৭০ বছর বয়সে গিয়ে দেখা যায় পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পায়।
অ্যান্ড্রোপজ বা পুরুষদের ‘মেনোপজ’ কী?
ঋতুবন্ধের মতো অ্যান্ড্রোপজ শুধু বয়স বাড়ার উপরেই নির্ভর করে না। ডায়াবিটিস, অসবাদ, ক্লান্তি, দুর্বলতা, বিভিন্ন যৌন সমস্যার কারণে টেস্টোস্টেরন উৎপাদন কমে গেলেও বয়সের আগেই অ্যান্ড্রোপজ হতে পারে। ওবিসিটির সমস্যা থাকলেও সময়ের আগেই অ্যান্ড্রোপজ হতে পারে।
‘মেনোপজ’ ও অ্যান্ড্রোপজের পার্থক্য
মেনোপজের তুলনায় অ্যান্ড্রোপজ অনেক ধীর গতিতে হয়। মেনোপজের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয় পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লেও শুক্রাশয় সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয় না। অল্প মাত্রায় হলেও টেস্টোস্টেরন তৈরি হয়। সুস্থ পুরুষদের ক্ষেত্রে ৮০ বছর বয়সেও শুক্রাণু তৈরি হতে পারে। তবে ৫০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে শুক্রাণুর গুণগত মান কমে যায়।
মেনোপজের মতোই অ্যান্ড্রোপজ পুরুষদের অনেক শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটায়। অবসাদে ভোগা, যৌন মিলনের চাহিদা কমে যাওয়া, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা, শুক্রাশয় ছোট হয়ে আসা, শরীরের রোম ঝরে যাওয়া, মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটা, আত্মবিশ্বাসের অভাব— এগুলিই অ্যান্ড্রোপজের অন্যতম লক্ষণ। ‘মেনোপজ’-এর পর মহিলারা মা হতে না পারলেও পুরুষদের অ্যান্ড্রোপজের পরেও বাবা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও শুক্রাণুর মান দুর্বল হয়ে যাওয়ায় অনেক জটিলতা আসতে পারে। সন্তানের ক্ষেত্রেও অনেক রকম অসুখের ঝুঁকি থাকে।
নির্দিষ্ট সময়ের আগেই যদি এ রকম লক্ষণ শরীরে দেখা যায়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।