ঘরে ঘরে লিভারের রোগ। বাড়িবাড়ি হওয়ার আগেই সাবধান হোন। ছবি: সংগৃহীত।
লিভারের রোগ সারে না, এমন ভুল ধারণা আছে অনেকেরই। সঠিক সময়ে রোগ চিহ্নিত করে চিকিৎসা শুরু হলে লিভারের অসুখ সারিয়ে তোলা সম্ভব। দীর্ঘদিনের লিভারের কোনও অসুখ থাকলে, জন্ডিস হয়ে থাকলে কিংবা অতিরিক্ত মদ্যপান করলে লিভারের ক্ষত বাড়তে থাকে। এক সময়ে তা জটিল লিভারের রোগে পরিণত হয়, যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলে ‘লিভার সিরোসিস’। সচেতনতার অভাব ও রোজকার যাপনে অসংযমের কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লিভারের রোগ অনেক দেরিতে ধরা পড়ে।
লিভার মেদ তৈরি করে। রক্তের মধ্যে দিয়ে তা পেশিতে পৌঁছয়। লিভার যতটা মেদ তৈরি করছে, আর যতটা খরচ করছে, তার মধ্যে যদি ভারসাম্য না থাকে, অর্থাৎ, মেদ বেশি হয়ে যায়, তা হলে সেটা পরতে পরতে লিভারে জমতে থাকে। তখন চিকিৎসকরা বলেন, ‘ফ্যাটি লিভার’ ধরা পড়েছে।
অতিরিক্ত তেলমশলাদার খাবার, মদ্যপান থেকে চড়চড়িয়ে বাড়ে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড। তখন লিভারে ধীরে ধীরে ক্ষত তৈরি হতে থাকে। এই সিনড্রোম একটু একটু করে সিরোসিসের জন্ম দেয়।
জন্মগত কোনও ত্রুটি ও কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য লিভারের অসুখ হতে পারে। মদ্যপানে রাশ টানতে এবং পেটের ব্যথা কমাতে অনেকে অনেক রকম ওষুধ খেয়ে থাকেন। এই সব ওষুধ সাময়িক ভাবে যন্ত্রণা কমালেও, পাকাপাকি ভাবে লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। তখন লিভারের ক্ষত বহুগুণে বেড়ে যায়। এবং এর অন্তিমপরিণতি হল লিভার ক্যানসার।
কী ভাবে বুঝবেন জটিল রোগ বাসা বাঁধছে?
ঘন ঘন পেট খারাপ হতে পারে।
লিভারে ক্ষয় হতে থাকলে অ্যালবুমিন প্রোটিনের পরিমাণ কমে যায়, তখন পা ও গোড়ালিতে জ্বালাভাব হয়। এটিও একটি লক্ষণ।
পেটের তলদেশে তরল জমা হয়ে পেট ফাঁপার সমস্যার দেখা দিতে পারে। দেখে মনে হবে পেট ফুলে আছে। খিদে কমে যাবে, ওজন কমতে পারে। তখন সাবধান হতে হবে।
লিভার ভাল রাখার টোটকা
সংযত জীবন, সঠিক ডায়েট, নিয়মিত শরীরচর্চা খুবই জরুরি। আর সেই সঙ্গে রোগ গোপন না করে সঠিক সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোও দরকার।
কোনও রকম নরম পানীয়, বেশি চিনি দেওয়া প্যাকেটজাতীয় খাবার বা পানীয় খাওয়া চলবে না। মাখন, মার্জারিন, চিজ় জাতীয় সব কিছুই এড়িয়ে চলুন।
চুর শাকসব্জি, রুটি, দই খান। ফল খান। ফল থেকে আপনি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট পাবেন।
কখনওই পেট ঠেসে খাবেন না। হালকা খাবার খান।