ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি জ্বর ভোগাচ্ছে, সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের। ছবি: সংগৃহীত।
এত দিনের ভ্যাপসা গরমের পরে নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এক ধাক্কায় তাপমাত্রা নেমেছে। পেশাগত কারণে বাইরে বেরিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতেও হচ্ছে অনেককে। ভেজা জামাকাপড়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে সর্দি, জ্বরে ভুগছেন বহু মানুষ। বর্ষা আসার সময় এসে গেছে। তার আগেই ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপের কারণে একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়ার এমন খামখেয়ালিপনার জন্য ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি ভোগাচ্ছে। গা, হাত-পায়ে ব্যথা, গলাব্যথা, কাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
ঋতু বদলের সময়ে জ্বর হওয়া নতুন কিছু নয়। তাপমাত্রার আচমকা বদলের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভোগেন অনেকে। ইনফ্লুয়েঞ্জাও হতে দেখা যায়। এই সময়ে শুধু প্রয়োজন কিছু জরুরি সতর্কতা মেনে চলা।
কী ভাবে সাবধান থাকবেন?
১) চিকিৎসকেরা বলছেন, সর্দি-কাশি কমাতে গাদা গাদা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার দরকার নেই। ঘন ঘন কাশি হতে থাকলে ঢকঢক করে কাফ সিরাপ না খেয়ে বরং ঘরোয়া টোটকা কাজে লাগান। কাশি হলেই লবঙ্গ বা আদার কুচি মুখে রাখুন। আদার ছোট ছোট টুকরো শুকিয়ে নুন দিয়ে রাখতে পারেন। মুখে দিলেই কাশি তখনকার মতো কমে যাবে।
২) কাশি কমাতে প্রতিদিন ১ চামচ মধু খান। মধুতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যা সংক্রমণ কমায়।
৩) এই সময়ে বেশি এসি চালাবেন না। বৃষ্টিতে ভিজলে সেই জামা খুলে গা মুছে পোশাক বদলে নিন। এখনই রাতে মাথার দিকে জানলা খুলে ঘুমোবেন না। গায়ে হালকা চাদর রাখলে ভাল।
৪) বেশি ভোরে বা বেশি রাতের দিকে স্নান না করাই ভাল।
৫) ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে উষ্ণ গরম জলে স্নান করুন।
৬) রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা লাগা এবং সর্দি-কাশির থেকে রেহাই মিলবে। হলুদে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা অনেক রকমের স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা থেকে রেহাই দেয়।
৭) সাধারণ সর্দি এবং কাশির জন্য আর একটি কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার হল লেবু, দারচিনি এবং মধুর মিশ্রণ। এই সিরাপ নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৮) জ্বর তিন দিনের বেশি থাকলে নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খান। দরকার হলে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিন।
৯) বৃষ্টিবাদলের এই সময়ে পেটের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ডায়েরিয়া তো হয়ই, তা ছাড়া, রাস্তার ধারে শরবত, লস্যি, কাটা ফল খেলে টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড, জলবাহিত হেপাটাইটিসের কারণে জন্ডিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। চেষ্টা করুন বাড়ির খাবার খেতে। ঘরে তৈরি হাতরুটি, সবজি, ফল খান। ডালিয়ার খিচুড়ি, ওট্স, সাবুদানার খিচুড়িও খেতে পারেন। শাকপাতা খেলে ভাল করে নুন-জলে ধুয়ে তবে খান।
১০) চা তৈরির সময়ে তার সঙ্গে আদা, গোলমরিচ, দারুচিনি ফুটিয়ে সিরাপ তৈরি করে নিতে পারেন, এটাও গরম গরম খেলে আরাম লাগবে।