অধিকাংশ হার্টের রোগীরই ঘুম কম হওয়ার সমস্যা রয়েছে। প্রতীকী ছবি।
বছর কয়েক আগেই ‘গ্লোবাল এপিডেমিক’-এর তকমা পেয়েছে অনিদ্রা রোগ। সমীক্ষা বলছে, বিশ্বে শতকরা প্রায় ৪৫ শতাংশ মানুষ অনিদ্রার রোগে আক্রান্ত। সব বয়সের মানুষ ঘুম সংক্রান্ত এই সমস্যা নিয়ে ভুগছেন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতি দিন অন্তত ৭ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম প্রয়োজন। কিন্তু ব্যস্ততাময় জীবনে নিশ্চিন্তে ঘুমানোর অবকাশ প্রায় নেই বললেই চললেই। কাজের বিপুল চাপ, জীবন কেন্দ্রিক বিভিন্ন সমস্যা, অবসাদ, মানসিক উদ্বেগ— সব মিলিয়ে ঘুমের পরিমাণ ক্রমশ কমছে। ঘুমের অভাবে দেখা দিতে পারে নানা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাও।
১) শরীরচর্চা না করা, খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতা— কারণগুলিকে ধরা হত। গবেষণা বলছে, ঘুমের ঘাটতি থাকলেও বাড়তে পারে ওজন। শুধু তা-ই নয়, কোনও মানুষের স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুমের।
২) চিকিৎসকদের মতে উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। তবে আজকালের এই নিদ্রাবিহীন জীবনযাপনও বাড়াতে পারে হৃদ্রোগের ঝুঁকি। ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেশন’-এর করা গবেষণা তা-ই বলছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ হার্টের রোগীরই ঘুম কম হওয়ার সমস্যা রয়েছে।
৩) ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যোগসূত্র নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা হয়ে আসছে। চিকিৎসকরা নিশ্চিত করে বলেছেন পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে বিঘ্নিত হতে পারে মানসিক স্বাস্থ্য। অনেক দিন ধরে ঘুমের ঘাটতি কারণে গ্রাস করতে পারে মানসিক অবসাদও।
৪) প্রত্যেকেরই একটি স্বতন্ত্র ক্ষমতা থাকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার। যে কোনও রোগের প্রাথমিক ঝড় শরীর নিজেই সামাল দেয়। সেই প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়, যখন শরীরে ঘুমের ঘাটতি ঘটে। দিনের পর দিন কম ঘুমোনোর প্রভাব পড়ে শরীরের অন্দরে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতা হারাতে থাকে শরীর।
কোন বয়সের মানুষের কতটুকু ঘুম প্রয়োজন?
১) সদ্যোজাত: ১৭-১৮ ঘণ্টা
২) ৪ থেকে ১২ মাস: ১২-১৬ ঘণ্টা
৩) ৩ থেকে ৫ বছর: ১০-১৩ ঘণ্টা
৪) ৬ থেকে ১২ বছর: ৯-১২ ঘণ্টা
৫) ১৩ থেকে ১৮ বছর: ৮-১০ ঘণ্টা
৬) ১৮ থেকে ৬০ বছর: ৭ ঘণ্টা
৭) ৬১ থেকে ৬৪ বছর: ৭-৯ ঘণ্টা
৮) ৬৫ থেকে সকলে: ৭-৮ ঘণ্টা