আল্ট্রাসাউন্ড এবং এক্সরে ব্যবহার করে এন্ডোস্কোপি করার পর আঁতকে ওঠেন চিকিৎসকরা! ছবি: টুইটার।
কর্নাটকের এক ব্যক্তির পেটে একশোরও বেশি কয়েনের হদিস পেয়ে বিস্মিত হয়ে পড়েন চিকিৎসকরা। বছর ৫৮-এর সেই ব্যক্তির পেটে হঠাৎ করে যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আল্ট্রাসাউন্ড এবং এক্সরে ব্যবহার করে এন্ডোস্কোপি করার পর আঁতকে ওঠেন চিকিৎসকরা! ব্যক্তির পেটে ১৮৭টি কয়েনের খোঁজ পেলেন তাঁরা।
চিকিৎসকরা জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি স্কিৎজ়োফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। আর এই রোগের কারণেই ভুলবশত কয়েনগুলি গিলে ফেলেছিলেন তিনি। স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া, নামটির মতোই কঠিন রোগটিও। রোগটিকে অল্প কথায় ব্যাখ্যা করা কঠিন। তবে সহজ করে বলতে গেলে এটি এমন এক রোগ, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি বাস্তব আর কল্পনাকে গুলিয়ে ফেলেন। এক বার এই রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত সারা জীবনই চিকিৎসার প্রয়োজন হয় আক্রান্তের।
শনিবার পেটে তীব্র যন্ত্রণা ওঠায় ব্যক্তির আত্মীয়রা তাঁকে বাগালকোটের এস নিজলিঙ্গপ্পা মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যুক্ত হাঙ্গল শ্রী কুমারেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যান। সংবাদমাধ্যমকে চিকিৎসক ঈশ্বর কালাবুর্গী জানান, ‘‘ওই ব্যক্তি একটি মানসিক রোগে ভুগছিলেন। গত দু-তিন মাস ধরে তিনি কয়েন গিলতে থাকেন। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা ও বমির জন্য তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
অস্ত্রোপচার করে মোট ১৮৭ টি কয়েন বার করা হয় যার ওজন ছিল প্রায় দেড় কেজি। কয়েনগুলির মধ্যে ৫৬ টি পাঁচ টাকার কয়েন, ৫১ টি দু’টাকার কয়েন আর ৮০ টি এক টাকার কয়েন ছিল। অস্ত্রোপচারের পর রোগী সুস্থ আছেন, তাঁকে চিকিৎসকদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’’
স্কিৎজ়োফ্রেনিয়ার লক্ষণ কী?
এই রোগের অন্যতম প্রধান একটি লক্ষণ, বাস্তব পরিস্থিতির ভুল ব্যাখ্যা করা। কিছু ক্ষেত্রে স্কিৎজ়োফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভাবেন যে, কেউ তাঁদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন, কেউ কেউ খ্যাতি, ভালোবাসার সম্পর্কেও ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে থাকেন। কেউ কেউ এমন কিছু দেখেন, যার আদৌ কোনও বাস্তব অস্তিত্বই নেই। কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে কথা বলার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।