ঠান্ডা এবং গরম সেঁক দিয়ে ব্যথা কমাতে হবে। ছবি- সংগৃহীত
সকালে ঘুম থেকে উঠেই খেয়াল করলেন কাঁধ থেকে কনুই পর্যন্ত ব্যথা। বিশেষ পাত্তা না দিয়ে সারা দিন নানা কাজে ডুবে রইলেন। দিনের শেষে বাড়ি ফিরলেন অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে। কারণ, তত ক্ষণে সকালের ওই ব্যথাই নেমে এসেছে হাতের আঙুল পর্যন্ত। দিনে দিনে সেই ব্যথা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেল যে, ভারী কোনও কাজ করা দূরস্ত্, হাতের মুঠোয় শক্ত করে কিছু ধরাই অসম্ভব। কনুইয়ের হাড়ে এ ধরনের ব্যথা হওয়া, কনুইয়ে ভর দিতে না পারা, মুঠো করতে না পারা, ভেজা জামা-কাপড়ের জল নিংড়াতে না পারা বা রুটি বেলতে না পারা, এ সবই ‘টেনিস এলবো’র লক্ষণ হতে পারে। ডাক্তারি পরিভাষায় যার নাম ল্যাটারাল এপিকনডিলাইটিস। এই ব্যথার উৎস হাতের কব্জির পেশি থেকে। দিনের পর দিন দেহের ওজনের তুলনায় ভারী জিনিস তোলা বা ভারোত্তলনের ক্ষেত্রে ওজনের অসম বণ্টনের ফলে এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
কী করলে সারবে ব্যথা?
এই রোগ পুরোপুরি সারে না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মুঠো মুঠো ব্যথার ওষুধ খেলে বা ইঞ্জেকশন নিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে টেনিস এলবোর ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় মাত্র।
কী করবেন না?
ব্যথার উপর ব্যায়াম নয়। ব্যথা কমাতে গিয়ে সকাল-সন্ধ্যা ব্যায়াম করছেন? ব্যথা তো কমবেই না, উল্টে বেড়ে যাবে। দীর্ঘ দিন একই জায়গায় যন্ত্রণা হওয়ার ফলে পেশি ফুলে যেতে পারে। ব্যথা হতে পারে। প্রাথমিকভাবে দিন তিনেক সব রকম ভারী কাজ বন্ধ রাখতে হবে। ঠান্ডা এবং গরম সেঁক দিয়ে ব্যথা কমাতে হবে। ওই জায়গায় ব্যথা কমানোর মলমও লাগানো যেতে পারে। না কমলে অবশ্যই চিকিৎকের পরামর্শ নিতে হবে।
সমাধান কোন পথে?
ব্যথা কমলে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। প্রথমে, টান টান করে সামনের দিকে হাত খুলে দিন। হাত মুঠো করে কব্জি ধীরে ধীরে ঘোরাতে থাকুন। এক-একটি হাতে পাঁচ বার করে করবেন।
এর পর, দেওয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড়ান। আঙুল দিয়ে দেওয়াল বেয়ে উঠতে থাকুন, যত দূর হাত পৌঁছোয়। দু’হাত সামনের দিকে খুলে দিয়ে, হাতে সমান মাপের হালকা ওজন নিন (জলের বোতলও হতে পারে)। এ বার এক থেকে দশ গুনতে গুনতে কনুই ভাঁজ করুন, খুলুন। খেয়াল রাখবেন যেন দুটি হাত সমান্তরালভাবে থাকে। ধীরে ধীরে ব্যায়ামের সময় বাড়লে হাতের জোরও বাড়বে। যন্ত্রণাও কমবে।