সজনের ডাঁটা কিংবা ফুলের মতোই গাছের পাতাটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ছবি: সংগৃহীত।
ইদানীং সমাজমাধ্যমে ‘মোরিঙ্গা পাউডার’ নিয়ে বেশ মাতামাতি শুরু হয়েছে। কেউ খালি পেটে এই ভেষজ খাচ্ছেন। আবার, কেউ এই পাতার গুঁড়ো দিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে মাখছেন। নেটপ্রভাবীরা এমন ভাবে তার গুণাগুণ বর্ণনা করছেন, সে সব দেখে-শুনে মানুষ তা কিনতে ছুটছেন। অনলাইনেও মোরিঙ্গা পাউডার কেনার চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু এই মোরিঙ্গা আসলে কী, জানেন?
মোরিঙ্গা হল সজনেপাতা। অনলাইনে অর্ডার দিয়ে যে মোরিঙ্গা পাউডার কিনে খাওয়া হচ্ছে, তা আসলে সজনে পাতার গুঁড়ো। পাতা শুকিয়ে প্যাকেটজাত করা। সাধারণ খাবারে সজনে ডাঁটা দেওয়ার চল থাকলেও শহরাঞ্চলে এই পাতা খাওয়ার বিশেষ রেওয়াজ নেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, সজনের ডাঁটা কিংবা ফুলের মতোই গাছের পাতাটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালশিয়াম, আয়রন, জ়িঙ্ক, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামের মতো জরুরি বেশ কিছু খনিজ রয়েছে সজনে পাতায়। ঘূর্ণিঝড় রেমালের দোসর হয়েই এ বার হয়তো রাজ্যে মৌসুমি বায়ুর আনাগোনা বাড়বে। বর্ষায় আবার ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত হয়। এই মরসুমে ভাইরাস বাহিত রোগের সঙ্গে লড়াই করতেও সাহায্য করে মোরিঙ্গা বা সজনে পাতার গুঁড়ো। আর কী কী হয় সজনে পাতা খেলে?
১) নিয়মিত সজনে পাতার গুঁড়ো খেলে সহজে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে না। এই ভেষজের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন এ, সি, ক্যালশিয়াম এবং আয়রনের মতো খনিজ। অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ এই পাতাটি ফ্রি র্যাডিক্যালের প্রভাব থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
২) গ্যাস, পেটফাঁপা, অম্বল, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা নিরাময়ে দারুণ কাজ করে সজনে পাতা। অন্ত্রে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
৩) সজনে পাতার মধ্যে রয়েছে হাইপোগ্লাইসেমিক উপাদান। যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। যাঁদের ডায়াবিটিস সংক্রান্ত জটিলতার পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে, তাঁরা আগে থেকে সজনে পাতা গুঁড়ো খাওয়া শুরু করতে পারেন।
৪) ওট্স, ফ্ল্যাক্সসিড কিংবা কাঠবাদামের মতো সজনে পাতাও রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। দেশ-বিদেশের বহু গবেষণায় সে কথা প্রমাণিত হয়েছে।
৫) বর্ষায় নানা রকম সংক্রামক ব্যধির প্রকোপ বাড়ে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত সজনে পাতার গুঁড়ো খেলে এই ধরনের সমস্যা অনেকটাই বশে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করতে এবং শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এই ভেষজ।