শিশুর জন্ডিস ধরা পড়লে কী কী নিয়ম মানতে হবে ছবি: ফ্রিপিক।
জন্মের পরপরই অনেক শিশুর জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয়। বড়দের সঙ্গে সঙ্গে নবজাতকও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাদের শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি থাকলে জন্ডিস হতে পারে। আবার হেপাটাইটিস থেকেও শিশুর জন্ডিস হতে পারে।
হেপাটাইটিস হল লিভারের এক ধরনের প্রদাহ। রক্তের লোহিত কণিকাগুলি একটা সময়ে স্বাভাবিক নিয়মেই ভেঙে গিয়ে বিলিরুবিন তৈরি করে। এই বিলিরুবিন পরবর্তীকালে লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়ে পরিপাকতন্ত্রে ঢোকে। এর পর অন্ত্র থেকে শরীরের বাইরে বেরিয়ে যায়। বিলিরুবিনের এই দীর্ঘ পথপরিক্রমায় কোনও অসঙ্গতি দেখা দিলে বা রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে তখন জন্ডিস হয়। জন্ডিসের কারণে ত্বক, মিউকাস মেমব্রেন ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায়।
ম্যালেরিয়া বা থ্যালাসেমিয়ার মতো রোগে লোহিত রক্তকণিকাগুলি স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে না। এর ফলে জন্ডিস হতে পারে। একে বলে প্রি-হেপাটিক জন্ডিস। লিভারের সমস্যার কারণে বিলিরুবিন বেড়ে গেলে তাকে বলে হেপাটাইটিক জন্ডিস।
জন্ডিস হলে শিশু খেতে চাইবে না। চোখ, হাত-পায়ের তালু, মুখমণ্ডল ও শরীরের অন্যান্য অংশ হলুদ হয়ে যাবে। তাই সময় থাকতে হেপাটাইটিস এ এবং বি-র প্রতিষেধক শিশুকে দিয়ে রাখা ভাল। এই প্রতিষেধক দেওয়া থাকলে বিপদের আশঙ্কা কমবে।
জন্ডিস ধরা পড়লে শিশুকে বেশি করে জল খাওয়াতে হবে। শরীর যেন জলশূন্য না হয়। শরীরের সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্যটাও জরুরি। জন্ডিস হলে শিশুকে একবারে ভারী খাবার খাওয়ালেই বমি হবে। বারে বারে অল্প করে খাওয়াতে হবে। কিছু কিছু খাবার জন্ডিসের ক্ষেত্রে খুব ভাল কাজ করে, যেমন আখের রস। এ ছাড়াও টোম্যাটোর রস, খেজুর জন্ডিস রোগীদের জন্য খুব ভাল। বাটারমিল্ক, বিট, ডাবের জল বা লেবুর রসও নিয়মিত দিতে পারেন। নানারকম ফলের রস বা সব্জি দিয়ে হালকা স্যুপও ভাল।