কোনটি বেশি ক্ষতিকর? ছবি: সংগৃহীত।
বাড়ির সকলের চোখ এড়িয়ে সদ্য ধোঁয়ায় টান দিতে শিখেছে বছর ২৩-এর শ্রীমা। মা-বাবার চোখে না পড়লেও ঠাম্মির নাক এড়াতে পারেনি সে। ঠাম্মির পাশে শুতে যাওয়ার আগে মাউথওয়াশ দিয়ে রোজই মুখ ধুয়ে নেয়। তবে, ভুল তো মানুষের হয়ই। তেমনই এক রাতে খুসখুসে কাশির জ্বালায় ঠাম্মির কাছে ধরা পড়ে যায় শ্রীমা। মা-বাবাকে তার সিগারেট খাওয়ার কথা না জানালেও ধূমপান করার ভাল-মন্দ নিয়ে শ্রীমাকে রোজই নানা কথা শোনাতে থাকেন তার ঠাম্মি। সিগারেট খেলে ক্ষতি হয়, সে কথা শ্রীমা জানে। তবে, ঠাকুর ঘরে ধূপ-ধুনো জ্বালিয়ে ঘণ্টাখানেক বসে থেকে তাঁর ঠাম্মিরও যে একই রকম ক্ষতি হচ্ছে, সে কথা বলাতেই তিনি রেগে আগুন।
শুধু গন্ধ নয়, ধূপ বা সুগন্ধি মোমবাতি জ্বালালে ঘর ভরে যায় ধোঁয়ায়। মন ভাল রাখতেও ঘরে নানা রকম সুগন্ধি জ্বালান অনেকে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে ধূমপান করেন না, তাঁদের শরীরেও ধূমপায়ীদের মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ধূপ-ধুনোর ধোঁয়া সিগারেটের মতোই ক্ষতিকর। বদ্ধ ঘরে হাওয়া চলাচলের অভাবে সেই ধোঁয়া বাইরে বেরোতে পারে না। যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে শরীরে। তাই পরিবেশের দূষিত বায়ুর পাশাপাশি বাড়ির ভিতরের বায়ু আদৌ নির্মল কি না, সেই বিষয়েও সচেতন থাকা জরুরি। ধূপের মধ্যে রয়েছে কার্বন ডাইঅক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড, বেঞ্জন, টলুয়েন এবং অলডিহাইড্স-এর মতো রাসায়নিক। অনেকেই হয়তো জানেন না, ধূপ-ধুনো পোড়ালে ধোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রাসায়নিকগুলি শুধু নাক নয়, কানের মাধ্যমেও আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। ফলে শ্বাসযন্ত্র তো বটেই, কানের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও নষ্ট হয়। চোখে, নাকে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, কাশি, অ্যাজ়মার মতো সমস্যা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে, ঘরের জানলা-দরজা খোলা রেখে সারা দিনে এক-দুটো ধূপ জ্বালানোই যায়। সুগন্ধি মোমবাতির ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই রকম।