রাত জাগার অভ্যাসে শরীরের ক্ষতি হচ্ছে অনেক। ছবি: সংগৃহীত।
রাতের খাওয়াদাওয়া শেষ করতেই ১১টা বেজে যায়। তার পর চলে ঘণ্টা দুয়েক ধরে ওয়েবসিরিজ় দেখার পর্ব। সেটা শেষ হলে আবার বিছানায় শুয়ে খানিক ক্ষণ নেটমাধ্যমে চোখ রাখা। ঘড়ির কাঁটা ২টো পেরিয়ে ৩টে, কখনও কখনও আবার ৪টেও বেজে যায় ঘুমোতে ঘুমোতে। এ ভাবেই রাতের পর রাত কেটে যায়। রাত জাগার অভ্যাসে কিন্তু শরীরের ক্ষতি হচ্ছে অনেক। হঠাৎই নানা রকম গোলমাল ধরা পড়ল শরীরে! চিকিৎসকের কড়া নির্দেশ, এ বার থেকে তাড়াতাড়ি ঘুম এবং সকালে ঠিক সময় ওঠা আবশ্যিক।
কিন্তু বললেই তো আর হল না! ঘুমের অভ্যাস বদলানো মুখের কথা নয়। দীর্ঘ দিন ধরে যদি কেউ রাত জাগতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন, তা হলে হঠাৎ করে তা বদলে ফেলে ভোর ৬টায় ওঠার অভ্যাস তৈরি করা মোটেই সহজ নয়। অন্তত তিন সপ্তাহ টানা যদি সকাল সকাল উঠতে পারেন, তবেই অভ্যাস একটু একটু করে বদলাতে শুরু করবে। কিন্তু শুরুটা কী করে করা যায়? রইল কিছু সহজ নিয়ম, যা মানতে পারলে একটু হলেও নতুন অভ্যাস তৈরি হতে পারে।
১. রোজ সকাল ৬টা নাগাদ ঘুম থেকে ওঠা এবং ১০টার পর ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস করতে পারলে ভাল। কিন্তু এক দিনে এত বড় বদল করতে যাবেন না। তার চেয়ে একটু একটু করে নিজের ঘুমের সময়টা মানিয়ে নিন। রাতে মোবাইল ঘাঁটার অভ্যাসে রাশ টানতে পারলেই দেখবেন, অনেকটা লাভ হয়েছে।
২. কোন সময়ে ঘুমোতে যাচ্ছেন এবং কোন সময়ে উঠবেন, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ রোজ একই সময়ে ঘুমোনো এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠা। না হলে শরীরের সমস্যা হবেই। চেষ্টা করু্ন, অফিস থেকে বাড়ি ফিরেই আগে খাওয়াদাওয়া সেরে নিতে। খাওয়াদাওয়ার পর ঘণ্টাখানেক মোবাইল, টিভির জন্য বরাদ্দ রাখতে পারেন। তার পরে না হয় একটু হাঁটাহাঁটি করলেন। তার পর বিছানায় শুতে যান। ঘুম না এলে খানিক ক্ষণ বই পড়তে পারেন, গান শুনতে পারেন, তবে মোবাইলের দিকে হাত বাড়াবেন না ভুলেও।
৩. ঘুমোনোর অন্তত দু’ঘণ্টা আগে রাতের খাবার সেরে নিন। রাতে যত কম তেল-মশলাযুক্ত খাবার খেতে পারবেন, তত ভাল। ঘুমের আগে গ্রিন টি বা ক্যামোমাইল টি খেলে ঘুম আসতে সুবিধা হবে। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লে সকালে উঠতেও সমস্যা হবে না।
৪. ঘুমের এক ঘণ্টা আগে কোনও বৈদ্যুতিন যন্ত্রের ব্যবহার করবেন না। তাতে ঘুম আসতে অনেক বেশি দেরি হয়ে যাবে। বরং ফোনে পর দিনের অ্যালার্ম সেট করে বিছানা থেকে বেশি খানিকটা দূরে রেখে দিন। যাতে অ্যালার্ম বন্ধ করতে পর দিন উঠে অনেকটা যেতে হয়। এতে ঘুমও ভেঙে যাবে সহজে।
৫. ঘুম থেকে উঠে জানালার সামনে কিংবা বারান্দায় গিয়ে সূর্যের আলোতে খানিক ক্ষণ সময় কাটান। দেখবেন নিজেকে বেশ তরতাজা দেখাচ্ছে। রোজ সকালের মিঠে রোদ গায়ে লাগাতে পারলে মনমেজাজ ভাল থাকবে, সকালে ওঠার তাগিদও তৈরি হবে।