গরমে কোন কোন পানীয় খেলে উল্টে তেষ্টা বেড়ে যাবে? ছবি: সংগৃহীত।
শরীরে জলের ঘাটতি নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি করে। পর্যাপ্ত জলের অভাবে শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগবালাই। এমনকি, ওজনও বেড়ে যেতে পারে জল না খেলে। গরমের মরসুমে চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, সকলেই বলে থাকেন, সুস্থ থাকার অন্যতম মন্ত্র হল পরিমাণ মতো জল খাওয়া। এই সময় গলা ভেজাতে অনেকেই জলের তুলনায় নরম পানীয় খাওয়ার মাত্রা বাড়িয়ে দেন। কিন্তু জানেন কি, তীব্র গরমে জলের চাহিদা মেটাতে যে সব পানীয়কে আঁকড়ে ধরছেন, তারাই অজান্তে শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে?
১) অফিসে কাজের চাপে সারা দিনে প্রচুর পরিমাণে চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে বহু মানুষের। ক্লান্তি কাটিয়ে শরীরে দ্রুত শক্তির জোগান দিতে কফি দারুণ উপকারী। তবে গরমের দিনে দু’কাপের বেশি কফি খাওয়া একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়, এর ফলে শরীরে জলের ঘাটতি হতে পারে।
২) গরমকালে গলা ভেজানোর জন্য অনেকেই ডায়েট সোডা বা অধিক শর্করাযুক্ত নরম পানীয় খেয়ে থাকেন। সোডাজাতীয় পানীয় খেলে হয়তো সাময়িক ভাবে তৃষ্ণা মেটে, কিন্তু শরীরে জলের ঘাটতি থেকেই যায়। হতে পারে ডিহাইড্রেশন।
৩) মদ্যপানের কারণেও শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। শরীর থেকে জল টেনে নিতে এই অভ্যাস একাই একশো৷ উৎসব-অনুষ্ঠানে অল্পস্বল্প মদ্যপানের অভ্যাসে এ ধরনের ঝুঁকি নেই। কিন্তু নিয়মিত মদ্যপান সমস্যা ডেকে আনে। মাথাব্যথা, জিভ শুকিয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, শরীরে জলের পরিমাণ কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয় এই উপসর্গগুলি।
৪) প্রচুর পরিমাণে নোনতা খাবার খেলেও ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে। নুনের মাত্রা বেশি হয়ে গেলেই শরীর থেকে তা জল শুষে নেয়। তাই গরমের দিনে অতিরিক্ত নুন খাওয়ার অভ্যাস এড়িয়ে চলুন।
৫) শরীরের যত্ন নেয় ফল। গোটা ফল খাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই ফলের রসও খান। বাড়িতে বানিয়ে নিলে আলাদা বিষয়। কিন্তু, বাজারচলতি ফলের রসের চিনির পরিমাণ বেশি। চিনি জল শুষে শরীর ভিতর থেকে শুষ্ক করে তোলে। তাই কৃত্রিম উপায়ে বানানো ফলের রস না খাওয়াই ভাল।
কফি-ঠান্ডা পানীয়-মদ-কে ‘ডাইইউরেটিক’ পদার্থ বলা হয়। অর্থাৎ এই সব খেলে বার বার প্রস্রাব পায়৷ আর প্রস্রাব হচ্ছে বলে সবাই ধরে নেন, সব ঠিক আছে। কিন্তু আসলে বিপদ বাড়ে। কাজেই এ সব খেতে চাইলে পরিমিত পরিমাণে খান সঙ্গে জলটাও খান শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত।
গরমে ডিহাইড্রেশন এড়াতে কী করণীয়?
অন্য কোনও পানীয় নয়, পর্যাপ্ত মাত্রায় জল খান, অবশ্য যদি কিডনির অসুখ না থাকে। ফলের রস, স্যুপ, ডাবের জল, নুন–চিনির শরবত খেতে পারেন এক–আধ বার। কফির বদলে মাঝেমধ্যে এক–আধ কাপ চা খান। মদ্যপানের ইচ্ছে মাথাচাড়া দিলে তার আগে ও পরে অল্প অল্প করে জল খেতে থাকুন। কম তেলমশলাযুক্ত খাবার খান। পেটের গোলমাল হলে কিন্তু বিপদ বাড়বে।