বার্ড ফ্লু ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হচ্ছে মানুষের শরীরে। ছবি: ফ্রিপিক।
বিশ্বে প্রথম মানুষের শরীরে বার্ড ফ্লু ভাইরাসের টিকা দিতে চলেছে ফিনল্যান্ড। পশুপাখিদের সংস্পর্শে যাঁরা বেশি আসেন সেইসব মানুষদের প্রথম টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে টিকাদান শুরু হবে আগামী সপ্তাহ থেকেই।
‘ফিনল্যান্ড ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার’-এর তরফে জানানো হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার এক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা এই প্রতিষেধক তৈরি করেছে। ফিনল্যান্ডই প্রথম যারা মানুষের শরীরে টিকা দেবে। তার পর আরও ১৫টি দেশে বার্ড ফ্লুর প্রতিষেধক সরবরাহ করা হবে। প্রায় ৪ কোটি ডোজ তৈরি হয়েছে বলে খবর।
সরকারি ভাবে না হলেও বার্ড ফ্লু সংক্রমণ নিয়ে অনেক দেশেই সতর্কতা জারি হয়েছে। করোনার পরে বার্ড ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। জানা গিয়েছে, আমেরিকার ৩১টি রাজ্যে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাসের সংক্রামক প্রজাতি ছড়িয়ে পড়েছে। সে দেশের খামারগুলিতে হাঁস-মুরগির পাশাপাশি স্তন্যপায়ী প্রাণিরাও সংক্রমিত হচ্ছে বলে খবর। এমনকি গরুর দুধেও পাওয়া গিয়েছে বার্ড ফ্লু ভাইরাসের এইস৫এন১ প্রজাতি। বাড়িতে পোষা কুকুর-বিড়ালদেরও মধ্যে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। আর পোষ্যদের থেকে সুস্থ মানুষের শরীরেও ঢুকছে ভাইরাস। খামারে কাজ করেন যাঁরা, তাঁরা বেশি আক্রান্ত। সেই কারণেই যাঁরা পশুপাখিদের সংস্পর্শে বেশিরভাগ সময় থাকেন তাঁদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। খামার কর্মী, পশুপালকরা শুধু নন, পশু চিকিৎসকেদেরও টিকার ডোজ দেওয়া হবে। বার্ড ফ্লু আক্রান্ত পশু বা পাখিদের চিকিৎসা করতে গিয়ে পশু চিকিৎসকেরাও সংক্রমিত হচ্ছেন অনেক জায়গায়।
‘বার্ড ফ্লু’ ভাইরাস প্রচণ্ড ছোঁয়াচে, তাতে কোনও সন্দেহই নেই। খামারে একটি হাঁস বা মুরগির শরীরে ভাইরাস ঢুকলে, কিছু দিনেই খামারের পর খামারে মড়ক লেগে যায়। আবার পরিযায়ী পাখিরাও সেই দূর দেশ থেকে ভাইরাস বয়ে নিয়ে আসে। তাদের সংস্পর্শে এসেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো। বার্ড ফ্লু আসলে হল ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। আর মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্ত হয়ই। কাজেই বার্ড ফ্লু আক্রান্ত পাখির সংস্পর্শে এলে মানুষের শরীরেও ভাইরাস ঢুকতে পারে যে কোনও সময়ে। আর এই ভাইরাস খুবই ছোঁয়াচে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এক জন মানুষের শরীরে ভাইরাস ঢুকলে, তার থেকে আরও পাঁচ জনের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। আক্রান্তের হাঁচি, কাশি, থুতু-লালা, মলমূত্রের মাধ্যমে সুস্থ মানুষের শরীরেও চট করে ঢুকে যেতে পারে ভাইরাস। তাই এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষেধক দেওয়াটা খুবই জরুরি।