ডেঙ্গির ঝুঁকি এড়াতে মানতে হবে কিছু নিয়ম। ছবি: সংগৃহীত।
রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। স্বাস্থ্যভবনের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে বর্তমানে দৈনিক ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২৫০ থেকে ৩০০। শহর এবং শহরতলিতে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে প্রায়দিনই। সেই সঙ্গে নিম্নচাপের জেরে গত কয়েক দিনে বৃষ্টির দাপটও বেড়েছে। বৃষ্টিতে ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। সব মিলিয়ে চিন্তার ভাঁজ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের কপালে। ইতিমধ্যে তিন জেলার (উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ) আটটি এলাকাকে ডেঙ্গির ‘হটস্পট’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শহরের একাধিক হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে দোসর ম্যালেরিয়াও। উৎসবের মরসুমে ডেঙ্গির দাপটে নাজেহাল মানুষ। ডেঙ্গি নিয়ে সতর্কতার অভাব দেখা গিয়েছে অনেক জায়গাতেই। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি থেকে দূরে থাকতে অত্যধিক সাবধান হওয়া ছাড়া উপায় নেই বলেই মত চিকিৎসকেদের। সতর্ক থাকলে ডেঙ্গি এড়ানো সম্ভব বলে আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। ডেঙ্গির আবহে নিজেকে এবং আশপাশের মানুষদের সুস্থ রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। ডেঙ্গির ঝুঁকি এড়াতে কী করবেন, কোনগুলি নয়?
১) দমবন্ধ লাগে বলে সারা বছর মশারি ব্যবহার করেন না অনেকেই। তবে এই সময়টিতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোতে পারলে ভাল। মশার ধূপ মশা তাড়াতে অত্যন্ত কার্যকরী। খুব ভাল হয়, যদি জানলায় মশা-নিরোধক নেট লাগিয়ে দিতে পারেন। তা হলে মশা ঘরে ঢোকার সুযোগই পাবে না।
২) বাড়ির দরজা, জানলা সব সময় বন্ধ করে রাখুন। বিশেষ করে সকালের দিকে। কারণ সকালেই ডেঙ্গির মশার আনাগোনা বাড়ে। জানলায় নেট টাঙানো না থাকলে বন্ধ করে রাখাই শ্রেয়।
৩) বাইরে গেলে তো বটেই, এমনকি ঘরে থাকলেও লম্বা হাতা পোশাক পরে থাকুন। গোড়ালি-ঝুল ট্রাউজার্স পরুন। তা হলে সহজে মশা কামড়াতে পারবে না।
৪) শরীরে জলের পরিমাণ কমে গেলে যে কোনও রোগই খুব তাড়াতাড়ি বাসা বাঁধে। ডেঙ্গির ঝুঁকি এড়াতে তাই বেশি করে জল খান। তাতে ডেঙ্গি হলেও বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করবে না।
৫) কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, সর্দি-কাশি, খাবারে অনীহা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়ার মতো উপসর্গগুলি দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যান। ফেলে রেখে বিপদ না বাড়ানোই ভাল।
কোনগুলি করবেন না?
১) বাড়ির আশপাশে, ছাদে, এমনকি রান্নাঘরেও কোনও খোলা পাত্রে জল রাখবেন না। জমা জলে ডেঙ্গির মশা বংশবিস্তার করে। বৃষ্টির জল জমতে পারে, এমন কোনও পাত্র, টব কিংবা অন্যান্য জিনিস ফেলে দিন।
২) জ্বর হলেই নিজের সিদ্ধান্তে ওষুধ খাবেন না। শারীরিক সমস্যা হলে অতি অবশ্যই চিকিৎসককে জানান। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী চলুন।
৩) জ্বর হলেই ঘন ঘন প্যারাসেটামল, ক্যালপল জাতীয় ওষুধ খাবেন না। তাতে সাময়িক জ্বর কমলেও ভাইরাস শরীরে থেকেই যায়। সেখান থেকেই পরে সমস্যা হতে পারে।
৪) ডেঙ্গি পরীক্ষার ফল যদি পজ়িটিভ আসে তা হলে প্রথমেই চিকিৎসককে তা জানাতে হবে। নিজে থেকে স্টেরয়েড কিংবা অ্যান্টিবায়োটিক খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।