কুসুম খেলে কি ওজন বাড়ে? ছবি: সংগৃহীত।
আধুনিক জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে অনিয়মের জেরে শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ। আর তার হাত ধরেই ব্রাত্য হয় নানা খাওয়াদাওয়া। ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, থাইরয়েড, ওবেসিটি, পলিসিস্টিক ওভারি— জীবনশৈলীর দোষে তৈরি হওয়া এ সব রোগের হানায় খাদ্যতালিকা থেকে বাদ হয়ে যায় অনেক প্রিয় খাবারদাবার। ডিম খেতে পছন্দ করেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল! তবে কোলেস্টেরলের ভয়ে অনেকেই বাদ দেন ডিমের কুসুম। কেউ আবার ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে ডিমের সাদা অংশটি খেলেও হলুদ অংশ ছুঁয়েও দেখেন না।
ডিমের মোট দু’টি অংশ। সাদা অংশে থাকে প্রোটিন আর কুসুমে থাকে কোলেস্টেরল, ভিটামিন বি এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই সব উপাদান আমাদের নানা জৈবিক কাজে ব্যবহৃত হয়। কোলেস্টেরলেরও কিছু প্রয়োজনীয় কাজ থাকে। যেমন, পিত্তে উপস্থিত অ্যাসিড তৈরিতে একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে এটি। এ ছাড়া ভিটামিন ডি-র জোগান দিতে, হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতেও কাজে আসে কোলেস্টেরল। শরীরে নানা যৌন হরমোন ক্ষরণেও কোলেস্টেরল সাহায্য করে। কোলেস্টেরল মানেই শরীরের পক্ষে খারাপ, এই ধারণা বদলাতে হবে। শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে হলে ডায়েটে গোটা ডিম রাখতেই হবে। ওজন ঝরানোর ডায়েটেও ১টি গোটা ডিম খাওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা লো-কার্ব ডায়েট করছেন, তাঁদের তো ডায়েটে গোটা ডিম রাখা ভীষণ জরুরি।
দিনে ক’ টা ডিম খাওয়া নিরাপদ?
দিনে দু’টি কুসুম সমেত ডিম খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু সংখ্যাটা তার বেশি হলে খান সাদা অংশই। কারণ, কোলেস্টেরলের আধিক্যও শরীরের জন্য ভাল নয়। তা বলে আবার তেলে ভেজে বা মাখনে বেক করে ডিম খাবেন না। চেষ্টা করুন সেদ্ধ ডিমই খেতে। তেল-মশলা থেকে বরং দূরে থাকুন। বাদ দিন ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড। এতেই কমবে কোলেস্টেরলের ভয়। তবে কোলেস্টেরলের মাত্রা যদি খুব বেশি হয়, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়াই শ্রেয়।
ডিমের কুসুমের পুষ্টিগুণ
ডিমের কুসুম প্রথম শ্রেণির প্রোটিন। যদি কুসুম ছাড়া শুধু সাদা অংশ খান, তা হলে বিভিন্ন প্রকার অ্যামাইনো অ্যাসিড থেকে বঞ্চিত হবেন। একটা গোটা ডিমে ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। ডিমের কুসুম বাদ দিলে প্রোটিনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ গ্রাম। প্রোটিন ছাড়াও কোলিন, সেলেনিয়াম, জ়িঙ্ক, ভিটামিন এ, বি, ই, ডি ও কে থাকায় ডিমের পুষ্টিগুণের প্রায় পুরোটাই থাকে কুসুমে। ডায়েটারি কোলিন ও ভিটামিন ডি-র সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উৎস ডিমের কুসুম।