ঠান্ডার সময়ে শরীর সুস্থ রাখতে সকাল সকাল কোন পাঁচ কাজ করবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠতে যতই আলস্য লাগুক না কেন, যদি সকাল সকাল উঠে ৫টি কাজ করে ফেলতে পারেন, তা হলেই সারা দিন শরীর তরতাজা থাকবে। রক্তে জমা টক্সিন বা দূষিত পদার্থও বেরিয়ে যাবে। ঠান্ডার সময়ে জীবাণু সংক্রমণের হাত থেকেও বাঁচবেন।
শরীর ডিটক্স করার কথা সব চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদই বলেন। পরিবেশ, খাবার থেকে প্রতি দিনই কিছু বিষাক্ত পদার্থ আমাদের শরীরে পৌঁছয়। সুস্থ থাকার জন্য এই সব টক্সিন শরীর থেকে দূর করা প্রয়োজন। তা হলেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়বে। এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, রোজের খাবার ও অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ থেকে মাইকোটক্সিন ঢোকে শরীরে, যা খুবই ক্ষতিকর। আবার মাছ, মাংস, দুগ্ধজাত নানা খাবার থেকে ডাইঅক্সিন নামে একধরনের টক্সিনও ঢোকে, যা নানা রোগের কারণ হতে পারে। এই সব টক্সিন শরীর থেকে ছেঁকে বার করতে হলে কয়েকটি কাজ করতেই হবে।
নারকেল তেলে কুলকুচি
মুখের দুর্গন্ধ কমাতে ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে অনেকেরই ভরসা বাজারচলতি নানা কৃত্রিম মাউথওয়াশ। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেই রয়েছে এমন এক পদ্ধতি, যা দামে ও গুণে টেক্কা দিতে পারে যে কোনও কৃত্রিম মাউথওয়াশকে! মুখভর্তি নারকেল তেল নিয়ে যদি ১০-১৫ মিনিট কুলকুচি করা যায়, তা হলে মুখে জমে থাকা নানা রকম ব্যাক্টেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘অয়েল পুলিং’। এতে দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য ভাল থাকে। নারকেল তেল লালায় জমে থাকা স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাক্টেরিয়া নাশ করে।
গরম জলে স্নান
শীতের দিনে স্নান বাদ দিলে চলবে না। উষ্ণ জলে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল তেল, যেমন ইউক্যালিপটাস বা ল্যাভেন্ডার তেল ফেলে স্নান করতে পারেন। এতে সাইনাসের সমস্যা যেমন দূর হবে তেমনই ত্বকের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। শীতে ত্বকে নানা রকম অ্যালার্জি সমস্যা দেখা দেয়। এর থেকে রেহাই পেতে হলে স্নান করতেই হবে।
আদা–লেবুর জল
শরীর ডিটক্স করতে হলে কয়েক রকম ডিটক্স পানীয় খেতেই হবে। বিশেষ করে সকাল সকাল যদি এক গ্লাস উষ্ণ জলে আদা ও লেবুর রস দিয়ে খেতে পারেন, তা হলে শরীর তরতাজা থাকবে সারা দিন। আদা-লেবুর রসে এক চামচ মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। এতে মেদও ঝরবে দ্রুত, শরীরের পিএইচের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
শ্বাস নিন ও ছাড়ুন
শ্বাস-প্রশ্বাসের কিছু ব্যায়াম আছে, যা রোজ করলে ভাল। যার মধ্যে প্রথম করা উচিত অনুলোম-বিলোম। প্রথমে ডান দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, বাঁ দিক দিয়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার কাজ করতে হবে। পরে বাঁ দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, ডান দিক দিয়ে শ্বাস গ্রহণ ও বর্জনের অভ্যাস করতে হবে। নিয়মিত করলে ফুসফুসের জোর বাড়বে, সর্দিকাশি, ঘন ঘন হাঁচির সমস্যা দূর হবে।
হাঁটাহাঁটি ও যোগাসন
সকালে হাঁটার অভ্যাস করলে যেমন মেদ ঝরবে দ্রুত, তেমনই শরীরও সুস্থ থাকবে। হজমশক্তি আরও বাড়বে। প্রতি দিন নিয়ম করে সকালে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। যদি বাইরে বেরিয়ে হাঁটতে সমস্যা হয়, তা হলে ছাদে বা বাড়ির মধ্যেই হাঁটুন। তা ছাড়া রোজ অন্তত ১৫-২০ মিনিট যে কোনও রকম ব্যায়াম বা যোগাসন অভ্যাস করলে ভাল। কী ধরনের ব্যায়াম কার্যকর হবে, তা অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের থেকে জেনে নিতে হবে।