দুশ্চিন্তা থেকে উদ্বেগ, তার থেকেই ভয়ঙ্কর মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে। প্রতীকী ছবি।
বিনা কারণেই দুশ্চিন্তা মনে জন্ম দিচ্ছে অজানা ভয়ের। যে কোনও পরিস্থিতিতেই অতিরিক্ত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় ভুগছে এখনকার প্রজন্ম। আর তা থেকেই দেখা দিচ্ছে ‘প্যানিক অ্যাটাক’। এই শব্দবন্ধটা এখন একেবারেই অচেনা নয়। অনেকেই এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। ছোটরাও এমন মানসিক পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে। এর থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী?
মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মতে, কোনও বড় আঘাত পেলে অথবা জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় সাফল্য না পেলে অনেকের এমন হতে পারে। তবে তা সাময়িক। কিন্তু যদি প্যানিক অ্যাটাক ঘন ঘন হতে থাকে, তা হলে চিন্তার বিষয়। প্যানিক অ্যাটাক যদি খুব নিয়মিত হয় কারও, যখন তখন হয়, তা হলে তাকে বলা হবে ‘প্যানিক ডিজ়অর্ডার’। তাই প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছে, না কি তা ডিজ়অর্ডারের পর্যায়ে চলে গিয়েছে, তা আগে বুঝে নিতে হবে।
কাজের অত্যধিক চাপ, কর্মক্ষেত্রে জটিলতা, প্রত্যাশা পূরণ না হওয়া, উচ্চাকাঙ্ক্ষা— সব মিলিয়ে এই ধরনের উদ্বেগ জন্ম নেয়। খারাপ স্মৃতি কিংবা কোনও অনিশ্চয়তা মনের মধ্যে চেপে বসলেই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে। মাথার মধ্যে ঝিমঝিম করে। অস্থির লাগে। বুক ধড়ফড় করে। অনেকের সারা শরীর কাঁপতে থাকে, দম বন্ধ হয়ে আসে। বুকে ব্যথাও শুরু হয়। এমন লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে, প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছে।
প্রতিকারের উপায় কী?
মনোবিদের কথায়, বিষয়টি যদি সাময়িক হয়, তা হলে তা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু যদি লাগাতার হতে থাকে, তখন কাউন্সেলিং করাতে হবে। ডিপ ব্রিদিং বা অন্য কিছু ব্যায়ামেও উপকার পাওয়া যায়। সন্তান যদি অতিরিক্ত উদ্বেগে ভোগে, তা হলে মা-বাবাকে ধৈর্য ধরে বোঝাতে হবে। যে কোনও পরিস্থিতিতেই মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। বাড়িতেও যদি তেমন পরিবেশ থাকে, মা-বাবাও উৎকণ্ঠায় ভোগেন, তা হলে সমস্যা আরও বাড়বে।
প্রচণ্ড মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করলে নানা রকম বদল আসতে থাকে শরীরে। অনিদ্রা, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা, ওজন বাড়া তো আছেই, স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দেয়। ‘স্ট্রেস হরমোন’ কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। তখন কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও দেখা দেয়। কর্টিসল প্রভাব ফেলতে পারে স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও। স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ অনিয়মিত হয়ে গেলে হৃৎস্পন্দনের হার বাড়তে পারে। তাই সে ক্ষেত্রে দেরি না করেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।