—নিজস্ব চিত্র।
খড়গপুর আইআইটির হস্টেলের ঘর থেকে রবিবার উদ্ধার হয়েছিল শাওন মালিক (২১) নামে তৃতীয় বর্ষের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক ছাত্রের মৃতদেহ। সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের দল। আইআইটির আজাদ হলের তিনতলায় ৩০২ নম্বর ঘরে গিয়ে খতিয়ে দেখে তারা।
জানা গিয়েছে, শাওনের ওজন ছিল ৮০ কেজি। এ দিন, তাঁর সমপরিমাণ ওজনের বালির বস্তা দড়ি দিয়ে বেঁধে জানালার রড থেকে ঝুলিয়ে দেখেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। রবিবার এই ঘর থেকেই শাওনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সোমবার দুপুরে সেই ঘটনাই তদন্তে এসেছিল ফরেন্সিক দল। একটি বস্তাতে ৮০ কেজি বালি ভরে, উপরে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় দড়ি। তার পর পরীক্ষানিরীক্ষা চলে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে। যদিও বাইরে বেরিয়ে এসে এই বিষয়ে কিছুই বলতে চায়নি তারা। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। বিশেষজ্ঞের সাহায্য চেয়ে রবিবারই আবেদন জানানো হয়েছিল। তদন্তকারী অফিসার, আইসি এবং এসডিপিওর উপস্থিতিতে তাঁরা পরীক্ষানিরীক্ষা করেন। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”
রবিবার হস্টেলের ঘর থেকে তৃতীয় বর্ষের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া শাওনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। রবিবার সকালে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে হস্টেলে আসেন তাঁর বাবা-মা। এসে দেখেন তাঁর ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বার বার ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি। উত্তর দেননি ফোনেরও। তখন শাওনের বন্ধুদের ডাকেন তাঁর বাবা-মা। দরজা ভেঙে দেখা যায়, গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছেন শাওন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ। ঠিক কী কারণে শাওনের মৃত্যু হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে আইআইটি প্রশাসন। আইআইটি খড়্গপুরের ডিরেক্টর অমিত পাত্র জানিয়েছেন, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে তাঁরা পুরোপুরি ভাবে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন। তবে আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে আলাদা করে কোনও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। রবিবারই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার ধৃতিমান। রবিবারই ঘটনাস্থলে পুলিশ কুকুর নিয়ে আসা হয়। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য ময়নাতদন্তের পর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়াও খাবারের নমুনাও সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শাওন কি ক্যাম্পাস বা হস্টেলে কোনও হুমকি পেয়েছিলেন? সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যদিও ডিরেক্টর স্পষ্ট জানান, আইআইটিতে ‘থ্রেট কালচার’-এর কোনও বিষয় নেই।