ছবি: প্রতীকী
যন্ত্রের সাহায্যে জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করতে পছন্দ করেন না বলেই যোগাসন বেছে নেন অনেকে। বেশির ভাগ মানুষই মনে করেন, জিম বা যন্ত্রনির্ভর শরীরচর্চা সব বয়সিদের জন্য নয়। সে কথা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আবার ভারী যন্ত্র তুলতে গিয়ে চোট, আঘাত লাগার আশঙ্কাও থেকে যায়। যোগাসনে তেমন আশঙ্কা নেই বলেলই চলে। শরীরের সার্বিক উন্নতি, অঙ্গ সঞ্চালন এবং মনঃসংযোগ বাড়িয়ে তোলার জন্য যোগাসন ভাল। কিন্তু যদি পায়ে বা কোমরে চোট, আঘাত লাগে, তখন ব্যথার উপর শরীরচর্চা করতে বারণই করেন অনেকে। তবে সাম্প্রতিক ধারণা সে কথা বলছে না। বহু চিকিৎসকই এখন পা বা কোমরের আঘাত সারিয়ে তোলার জন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করতে পরামর্শ দেন। তারই মধ্যে এক ধরনের শরীরচর্চা হল পিলাটেজ়। বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পা, কোমরের ব্যথা বাড়তে থাকে। আবার, যেমন প্রসবের পর মহিলাদের পেট এবং কোমরের পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। কোনও দুর্ঘটনায় পায়ের লিগামেন্ট বা পেশিতে চোট লাগতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে শুধু যোগাসন তেমন ফলপ্রসূ হয় না বলেই মনে করছেন শরীরচর্চা বিশেষজ্ঞরা। এ সব ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে কাজ করে পিলাটেজ়। শরীরচর্চা করার আলাদা ধরনের জুতো, পোশাক কোনওটিই প্রয়োজন হয় না। যন্ত্র নির্ভরও নয়। যোগাসনের মতো মাটিতে শুয়ে অভ্যাস করতে হয় এই ব্যায়াম। চাইলেই সকলে অভ্যাস করতে পারেন। কিন্তু কে কোন ব্যায়াম করবেন এবং কেন করবেন, তা জেনে নেওয়া দরকার।
যোগাসন এবং পিলাটেজ় ঠিক কতটা আলাদা?
একেবারে সাধারণ কথায় বলতে গেলে যোগাসন হল শরীরের নমনীয়তা বাড়িয়ে তোলার একটি মাধ্যম। বিভিন্ন যোগাসনের সঙ্গে ক্রমাগত ‘ফ্লো’ এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া এবং ছাড়ার ছন্দে গোটা শরীরের ব্যায়াম হয়। অন্য দিকে, পিলেটেজ় হল দেহের পেশি এবং অস্থিসন্ধিগুলিকে সচল রাখার ব্যয়াম। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ অকেজো হয়ে পড়ে শরীরে অস্থিসন্ধিগুলি। পেশিরও ক্ষয় হতে শুরু করে। হাঁটাচলা, মাটিতে বসা বা ওঠার মতো অতি সাধারণ কাজ করতে বেশ বেগ পেতে হয়। এই সাধারণ কাজগুলি বেশি বয়সেও যাতে সহজে, সাবলীল ভাবে করা যায়, সেখানেই পিলেটেজ়ের মতো ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
একটি ‘ফ্লো’ বা প্রবাহের মাধ্যমে পর পর আসন অভ্যাস করে যাওয়াই হল যোগাসন। পিলাটেজ়ে রয়েছে একাধিক স্তর, যা দেহের পেশিগুলিকে মজবুত করতে সাহায্য করে। তাই কোনও রকম চোট, আঘাত সারিয়ে তুলতে চিকিৎসকেরা পিলেটেজ়ের উপরেই জোর দেন। তা ছাড়া এ ধরনের শরীরচর্চা অন্তঃসত্ত্বা বা নতুন মায়েদের জন্যও একেবারেই নিরাপদ। নানা রকম ব্যায়ামের প্রশিক্ষণ দেন কির্স্টেন কিং। তিনি বলেন, “যোগাসনের ক্ষেত্রে শরীরের ভঙ্গির সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাসের যোগ রয়েছে। দেহের সব অঙ্গের উপর এ ধরনের আসনের প্রভাব পড়ে। কিন্তু পিলাটেজ় দেহের নিম্নাংশের পেশির উপরেই বেশি কার্যকর।”