Arakan Army

আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে পুরো ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত! জুন্টার পাশাপাশি ‘বিকল্প’ খুলল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মায়ানমারের জুন্টা সরকারের পাশাপাশি আরাকান আর্মির সঙ্গে ঢাকা যোগাযোগ রাখছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৫৭
Muhammad Yunus led Bangladesh interim government talks with rebel group Arakan Army of Myanmar

—ফাইল ছবি।

মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের মোট দৈর্ঘ্য ২৭১ কিলোমিটার। আর গত ১৩ মাসের যুদ্ধে তার পুরোটাই দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর বৃহত্তম সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। সোমবার মায়ানমার পরিদর্শনের পর এ কথা জানালেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরি।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে মূহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সে দেশের বিদ্রোহী জোটের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গির। তিনি বলেন, ‘‘মায়ানমারের সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সে দেশের সরকার এবং আরাকান আর্মি—উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে বাংলাদেশ।’’ চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মংডু, বুথিডং, পালেতাওয়ার শহর-সহ মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। রাখাইন প্রদেশের সঙ্গেই রয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত। এই পরিস্থিতিতে সেখানে বসবাসকারী কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন অন্তর্বর্তী সরকার।

সপ্তাহ দুয়েক আগে ইউনূসের রোহিঙ্গা সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান জানিয়েছিলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রক আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে ঢাকা। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যে স্পষ্ট, সেই ‘যোগাযোগ’ স্থাপিত হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, একদা জুন্টার ‘চক্ষুশূল’ রোহিঙ্গা মুসলিমরা চলতি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হয়েছিল! আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজ়েশন (আরএসও)-এর যোদ্ধারা গত ছ’মাস ধরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় জুন্টা ফৌজের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়েছে। যদিও তাতে ‘শেষরক্ষা’ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা মুসলিমরা নতুন করে আরাকান আর্মির নিশানা হতে পারেন বলে আশঙ্কা ঢাকার।

রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য বলছে, ২০১৭-র অগস্টে মায়ানমারে গোষ্ঠীহিংসা শুরুর পরে সাত লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। যাঁদের অধিকাংশই রাখাইন প্রদেশের বাসিন্দা। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় ধাপে ধাপে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর চুক্তি হলেও জুন্টা সরকার তা ঠিক ভাবে মেনে চলেনি বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, এখনও মায়ানমারে রয়েছেন কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা। গৃহযুদ্ধের জেরে নতুন করে শরণার্থীর ঢল নামলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই আশঙ্কা কিছুটা সত্যি হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে জাহাঙ্গিরের বক্তব্যে। তিনি বলেন, রাখাইন প্রদেশে সাম্প্রতিক লড়াইয়ের পরে ৫০-৬০ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন