সিওপিডি থাকলে নিয়ম করে কী কী খাবেন। ছবি: ফ্রিপিক।
‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ বা ‘সিওপিডি’ এমন একটি রোগ যেখানে ফুসফুসে বিশুদ্ধ বাতাস বা অক্সিজেন ঢোকার রাস্তাই বন্ধ হয়ে যায়। শরীরে জমতে থাকে কার্বন-ডাই অক্সাইড। সিওপিডির রোগীরা ভীষণ শ্বাসকষ্টে ভোগেন। ইনহেলার বা অক্সিজেন সাপোর্ট রাখতে হয় সবসময়েই। বর্তমানে পরিবেশ দূষণ এতটাই বেড়ে গিয়েছে, যে সিওপিডির রোগীদের কষ্ট আরও বেড়েছে। রাস্তায় বেরোলে ধুলো, যানবাহনের ধোঁয়া, কলকারখানার ধোঁয়া তো রয়েছেই, পাশাপাশি ধূমপানের নেশাও মারাত্মক হয়ে উঠছে। ফলে শ্বাসের সমস্যা আরও বাড়ছে। দূষণ থেকে রেহাই পাওয়ার তেমন কোনও উপায় নেই, কাজেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাই বাড়িয়ে রাখতে হবে রোগীদের। তার জন্য যেমন জীবনযাপনে নিয়ন্ত্রণ দরকার, তেমনই সুষম আহারেরও প্রয়োজন।
এই বিষয়ে চিকিৎসক জানাচ্ছেন, রাস্তায় বেরোলে ধুলো-ধোঁয়া নাকে ঢুকবেই। সে জন্য মাস্ক পরা খুব জরুরি। কেউ যদি সামনে ধূমপান করেন, তা হলে সেখান থেকে সরে আসুন। টানা ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ধুলো, ধোঁয়ার মধ্যে থাকলেই সিওপিডির রোগীদের শ্বাসকষ্ট বাড়বে। বুকে চাপ চাপ ব্যথা অনুভূত হবে। ফুসফুসে প্রদাহ শুরু হবে। তাই রোজের খাওয়া এমন হতে হবে যাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে। ফুসফুসের জোরও বাড়াতে হবে। সিওপিডি থাকলে যেমন ধূমপান করা যাবে না, তেমনই বাইরের খাবারের প্রতিও রাশ টানতে হবে।
ফুসফুস ভাল রাখতে কী কী খাবেন?
১) প্রোটিন রাখতেই হবে রোজের তালিকায়। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধ, বাদাম, শাক ইত্যাদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
২) সিওপিডির রোগীদের কার্বোহাইড্রেটও খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেকেই কার্বোহাইড্রেট বাদ দেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভাত, রুটি, আলু, বিনস খেতে হবে। দানাশস্যও রাখুন রোজের পাতে। প্রাতরাশে ওট্স বা ডালিয়া খেতে পারেন।
৩) আমলকি খাওয়া খুবই ভাল। আমলকির রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। আমলকি খেলে ফুসফুস থেকে দূষিত পদার্থ বা টক্সিন বেরিয়ে যায়।
৪) তুলসিপাতার রস সিওপিডির রোগীদের জন্য খুবই ভাল। প্রতি দিন অল্প করে তুলসির রস খেলে সর্দি-কাশি, কফ জমতে পারবে না। তুলসি পাতা ফুটিয়ে চা করেও খেতে পারেন।
৫) পটাশিয়াম আছে এমন খাবার খেতে হবে। কুমড়োর বীজ, অ্যাভোকাডো, টম্যাটোতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আছে। রোজ একটি করে কলা খেলেই পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। পুষ্টিবিদেরা বলেন, মাঝারি মাপের একটি কলায় ৪০০ থেকে ৪৫০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে। মিষ্টি আলু খেতে পারেন যাতে পর্যাপ্ত পটাশিয়াম থাকে। পুষ্টিবিদেরা বলেন, এক কাপ পালং শাক নিয়মিত খেতে পারলে শরীরে পটাশিয়ামের অভাব হবে না।
৬) সিওপিডি থাকলে ঘন ঘন দুধ চা বা কফি খাবেন না। বদলে খেতে পারেন গ্রিন টি। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।