গ্যাস-অম্বল ভোগালে কী কী পানীয় এড়িয়ে চলবেন, জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।
বাঙালি মানেই ঝালে-ঝোলে-অম্বলে খাওয়া-দাওয়া। রোজকার পাতে ভাজাভুজি, মাছ বা মাংসের তেল জবজবে পদ থাকবেই। আর এ সব বেশিদিন খেলেই গ্যাস-অম্বলের সমস্যা জাঁকিয়ে বসবে। এক আধদিন ভূরিভোজ খেয়ে ফেলে চোঁয়া ঢেকুর তুললে তবু মানা যায়। কিন্তু অম্বল যদি রোজ রোজ হতে থাকে এবং সাধারণ খাবার খেয়েও গলা-বুক জ্বলতে থাকে, তখন চিন্তার কারণ আছে বৈকি! গ্যাস-অম্বল বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে তখন খাদ্যনালিতে প্রচণ্ড জ্বালাযন্ত্রণা, প্রদাহ শুরু হয়। মনে হয়, গলা দিয়ে টক জল, অ্যাসিড উঠে আসছে। এই সমস্যাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’। এমন এক নাছোড়বান্দা রোগ যা একবার ধরলে সহজে সারে না। আর এর উপরেই যদি এমন কিছু খাবার ও পানীয় আছে, যা প্রায় সময়েই খেতে থাকেন, তা হলে তা কমার বদলে আরও বেড়ে যাবে। তখন ওষুধ খেয়েও কাজ হবে না।
মুখ ও খাদ্যনালির সংযোগস্থলকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘ইসোফেগাস’। আর যখন হজমের সমস্যার কারণে পাকস্থলীর খাবার খাদ্যনালি দিয়ে উপরে উঠে আসতে থাকে তখন তাকে 'গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ়' বা 'জিইআরডি' বলা হয়। এমন সমস্যা থাকলে, এইসব পানীয় থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।
লেবুর শরবত
সকালে খালি পেটে লেবুর শরবত খান অনেকেই। মেদ কমানোর জন্য উষ্ণ গরম জলে মধু-লেবুর শরবত খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকেরই। কিন্তু অম্বলের সমস্যা থাকলে ভুলেও লেবুর শরবত খাবেন না। গ্যাস-অম্বল থাকলে কোনও রকম লেবুই বেশি খাওয়া ঠিক নয়। লেবু-পুদিনার শরবতও খাবেন না।
নরম পানীয়/প্যাকেটজাত পানীয়
বিয়েবাড়ি বা অনুষ্ঠানবাড়িতে জমিয়ে পেটপুজো করার পরে নরম পানীয়ই খোঁজেন অনেকে। অথবা আয়েষ করে বিরিয়ানি খাওয়ার পরে নরম পানীয়ের দিকেই হাতটা চলে যায়। বেশির ভাগই ভাবেন, নরম পানীয় পান করলে বুঝি তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যাবে। এই ধারণা একেবারেই ভুল। বরং ভারী খাবার খাওয়ার পরে নরম পানীয়ই হল শরীরের জন্য বিষ। বেশি মিষ্টি দেওয়া প্যাকেটজাত পানীয় খেলেও হজমের সমস্যা বাড়বে। অম্বল আরও মারাত্মক আকার নেবে।
কফিতে চুমুক দিচ্ছেন না তো
অম্বলের রোগীদের কফি একদমই চলবে না। ঘন দুধ, চিনি দেওয়া কফিতে চুমুক না দিলে, দিনই শুরু হয় না অনেকের। কিন্তু এই অভ্যাস অস্বাস্থ্যকর। কফিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন থাকে যা হজমের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
দুধ চা নৈব নৈব চ
রাতে খাবার খাওয়ার পরেই কি গলা-বুক জ্বালা করে আপনার? তা হলে সকাল সকাল ভুলেও দুধ-চায়ে চুমুক দেবেন না। যদি চোঁয়া ঢেকুর, অম্বলের সমস্যা থাকে, তা হলে দুধ-চা তা আরও বাড়িয়ে দেবে। বরং আদা দিয়ে লাল চা খেতে পারেন। গ্রিন টি-ও উপকারী। তবে খেয়াল রাখবেন, অম্বল থাকলে বেশি গরম কিছু খাবেন না।
মদ্যপান এড়িয়ে চলুন
অতিরিক্ত মদ পরিপাকের সমস্যা তৈরি করে। এক পেট খেয়ে মদ খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। কিন্তু এতে ফল হয় উল্টো। আবার খালি পেটে মদ খেলেও, বাঁধতে পারে বিপত্তি। তাই মদ্যপান এড়িয়ে চলাই ভাল।
মনে রাখতে হবে, শরীরে যেন জলের ঘাটতি না হয়। জল খান বেশি করে। যাঁরা মদ্যপান করেন, তাঁদের জন্যও সারা দিন পরিমাণমতো জল খাওয়া আবশ্যিক।