রাগি ৩০ দিন নিয়ম করে খেলে শরীরে কী কী বদল আসবে? ছবি: ফ্রিপিক।
গমের আটা বা ময়দার রুটি, পরোটা খেলেই কি অম্বল হয়? অনেকেই এই সমস্যায় ভোগেন। আটার রুটি খেলেই পেটফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দেখা দেয়। যদি এমন লক্ষণ লাগাতার দেখা দিতে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে গ্লুটেন অ্যালার্জি আছে। যাঁদের এই সমস্যা আছে, তাঁদের গমের আটা বা ময়দা খাওয়া একেবারেই চলবে না। সে ক্ষেত্রে বিকল্প হিসাবে জোয়ার, বাজরা বা রাগি খাওয়া যেতে পারে। রাগি এমন এক দানাশস্য, যাতে প্রোটিন, ভিটামিন, ফাইবার ভরপুর মাত্রায় রয়েছে। রাগি সহজপাচ্য এবং খেলে ওজনও দ্রুত কমে।
‘শরণ ইন্ডিয়া’-র প্রধান চিকিৎসক নন্দিতা শাহ সম্প্রতি গ্লুটেন অ্যালার্জি ও তাঁর বিকল্প খাবার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, রুটি, পাউরুটি, পাস্তা, কেক এই সব কিছুতেই গ্লুটেন রয়েছে, যা খেলে অনেকেরই নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। সিলিয়াক রোগ থাকলে গ্লুটেন খাওয়াই যায় না। সে ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রান্ত্রের আস্তরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পেটের তলদেশে ব্যথা, ডায়েরিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, চুলকানি, মাথাব্যথা ইত্যাদি নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই বিকল্প হিসেবে রাগিই খেতে পারেন তাঁরা। এক মাস টানা যদি রাগি দিয়ে তৈরি রুটি বা রাগির যে কোনও পদ খাওয়া যায়, তা হলেই বোঝা যাবে শরীরে কী কী প্রভাব পড়ছে।
রাগি এক মাস খেলে কী উপকার হবে?
আয়রন, ক্যালশিয়াম, প্রোটিন-সহ বেশ কিছু খনিজ রয়েছে, যা শুধু ওজন কমায় না, রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। চিকিৎসকের কথায়, রাগিতে ফাইবারের পরিমাণও অনেকটাই বেশি। এই ফাইবার অন্ত্রের জন্য ভাল। এ ছাড়াও, রাগিতে ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ নেই বললেই চলে। ফলে শরীরে বাড়তি মেদ জমার কোনও আশঙ্কাই থাকে না রাগি খেলে। রাগিতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও, রাগিতে থাকা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খনিজ লিভারে ফ্যাট জমতে বাধা দেয়। ফলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা যাঁদের আছে, তাঁরা রাগি খেলে অনেক উপকার পাবেন।
হজমের সমস্যাও দূর করবে রাগি। আটার রুটি বা ময়দার পরোটা খেলে যাঁদের গ্যাস-অম্বল হত, তাঁরা রাগি দিয়ে তৈরি রুটি যদি এক মাস খান, তা হলেই দেখবেন বদহজমের সমস্যা দূর হয়েছে। পাশাপাশি, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও কমবে ধীরে ধীরে। রাগিতে থাকা ফাইবার অনেক ক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি রাখে। তাই বার বার খিদে পাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। ওজন কমানোর জন্য ভাত বা রুটি না খেতে চাইলে, রাগি খেতে পারেন অনায়াসে। রাগি দিয়ে তৈরি খিচুড়ি, রাগির চিল্লাও বানিয়ে নিতে পারেন। রাগিতে প্রচুর ক্যালশিয়ামও থাকে। দুধে অ্যালার্জি থাকলে তার বিকল্প হিসেবেও রাগি খাওয়া যেতে পারে।