Child Diet Tips

হাড়ের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য শিশুর খাদ্যতালিকায় ক্যালশিয়াম রাখতেই হবে, কী কী খাওয়াবেন?

শিশুর পাতে রোজই ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। কোন কোন খাবার থেকে কতটা ক্যালশিয়াম পাবে খুদে, জেনে নিন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ১৩:০৮
Calcium-rich foods that every child should eat

শিশুর খাদ্য কেমন হওয়া উচিত, জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।

সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় থাকেন সব বাবা-মাই। শিশু কী খাবে, কতটা খাবে আর কখন খাবে— এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা নিয়ে তাঁরা সারা ক্ষণ জেরবার। শিশু রোজ যা যা খাচ্ছে, তার থেকে শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছচ্ছে কি না এটি জানাও খুব জরুরি। বাড়ন্ত শিশুকে হাড়ের পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য সুষম আহারই দিতে হবে। আর বিশেষ করে শিশুর খাদ্যতালিকায় রোজ ক্যালশিয়াম রাখতেই হবে। রোজ কোন কোন খাবার তালিকায় রাখলে শিশুর ক্যালশিয়ামের অভাব হবে না, তা জেনে নিন।

Advertisement

সুষম আহারের মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় দুধের কথা। এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীপিকা সুর জানাচ্ছেন, দুধের মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়। শিশুকে রোজ নিয়ম করে দুধ খাওয়ানো উচিত। তবে যদি দুধে অ্যালার্জি থাকে বা দুধ হজম না হয়, তা হলে পনির, দই, ছানা, মাখন এ সব রাখুন তার খাদ্যতালিকায়।

কড়াইশুঁটির দানায় আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম। যা তার হাড়ের পুষ্টিতে বিশেষ সহায়ক। সাধারণত, শীতের সব্জি এটি, তাই শীতেই তার খাবারে কড়াইশুঁটি রাখতে হবে। ব্রোকোলিও তাই। দীপিকা জানাচ্ছেন, অনেক শিশুই ব্রোকোলি খেতে চায় না। সে ক্ষেত্রে ব্রোকোলি দিয়ে স্যুপ বানিয়ে দিন। কয়েক টুকরো চিকেন সিদ্ধ দিয়ে দিন তাতে। অল্প করে মাখন দিয়ে গরম স্যুপ, সোনামুখ করে খেয়ে নেবে খুদে।

পিনাট বাটারেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম আছে। খেতে ততটা সুস্বাদু নয় বলে হয়তো শিশু খেতে চাইবে না। মায়েরা সে ক্ষেত্রে পাউরুটির মুচমুচে টোস্ট বানিয়ে তার মধ্যে পিনাট বাটার দিয়ে দিন। গরম আটার রুটি রোল করে ভিতরে পিনাট বাটার দিয়ে শিশুকে প্রাতরাশে দিন। সঙ্গে দিন ফ্রুট স্যালাড। ফল ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নুন ও গোলমরিচ দিয়ে দিন। ফল এমন ভাবে সাজিয়ে দিন যে দেখেই খেতে চাইবে শিশু।

বাড়িতে আমন্ড বাটারও এনে রাখতে পারেন। সাদা মাখন না দিয়ে পাউরুটিতে আমন্ড বাটার মাখিয়ে দিন। আমন্ড বা কাঠবাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ক্যালশিয়াম। ১/৩ কাপ কাঠবাদামে প্রায় ২৬৪ মিলিগ্রাম মতো ক্যালশিয়াম মেলে। সন্তানকে দুধের সঙ্গেও দিন কয়েক টুকরো কাঠবাদাম। দুধ-কর্নফ্লেক্স খেলে উপরে ছড়িয়ে দিতে পারেন।

মাছে প্রচুর ক্যালশিয়াম আছে। শিশুর হাড়ের বৃদ্ধির দিকে বিশেষ নজর দিতে হলে তার খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন মাছ। কাতলা, ভেটকি, কই মাছে ভাল পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে। ১০০ গ্রাম কাতলা মাছ খেলে ৫৩০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে, ১০০ গ্রাম ভেটকিতে প্রায় ৪৮০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। ৫০ গ্রাম করে, অর্থাৎ দিনে দু’পিস মাছও যদি খুদে খায়, তা হলেও রোজের ক্যালশিয়ামের অনেকটাই পূরণ হবে।

অনেক শিশুই মাছ পছন্দ করে না। এমন হলে সেই ঘাটতি ঢাকতে শিশুকে রোজ ডিম দিন। প্রাতরাশ ছাড়াও দিনের যে কোনও সময়ই ডিম দিতে পারেন তাকে। একটি সিদ্ধ ডিমে ৫০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে।

চিকিৎসক দীপিকার পরামর্শ, রোজের খাবারে দই রাখতেই হবে। দই খুব ভাল প্রোবায়োটিক। দইতে প্রচুর ক্যালশিয়ামও থাকে। শিশু স্কুলে গেলে টিফিন বক্সে বাকি খাবারের পাশাপাশি টক দইও দিয়ে দিন। ২০০ গ্রাম দই থেকে প্রায় ২৮০-৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে।

অনেক শিশু নিরামিষ পছন্দ করে, মাছ-ডিমে তাদের তেমন রুচি নেই। তা হলে, পনির বা ছানা খাওয়ান শিশুকে। ছোট ছোট টুকরো করে কাটা ১০০ গ্রাম বা এক বাটির মতো পনির খেলেই তার থেকে ৪৮০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম পাবে শিশু।

টাটকা ফলের রসও দিন শিশুকে। এক গ্লাস কমলালেবু বা মুসম্বির রস থেকে ৬০ মিলিগ্রামের মতো ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে। প্রাতরাশে যে দিন দুধ দেবেন না, সে দিন ফলের রস দিন। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাবার দিলে শিশুর অরুচি হবে না। মনে রাখতে হবে, শিশুকে একদম চা-কফি বা নরম পানীয় দেওয়া চলবে না। কারণ ক্যাফিন ক্যালশিয়াম শোষণে বাধা দেয়। তখন যতই পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান না কেন, তাতে লাভের লাভ কিছুই হবে না। বেশি নুন দেওয়া খাবার, বেশি তেল ও মশলা দেওয়া খাবার শিশুকে দেওয়া চলবে না।

আরও পড়ুন
Advertisement