এক জন পূর্ণবয়স্ক, কর্মক্ষম মানুষের প্রতি দিন গড়ে ৬০-৮০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। ছবি- সংগৃহীত
একটা বয়সের পর অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে রাশ টানতে বলেন চিকিৎসকরা। কারণ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তে বাড়তে থাকা কোলেস্টেরল হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। এর উপর যদি থাকে হৃদ্রোগের পারিবারিক ইতিহাস, তা হলে তো কথাই নেই! আবার কোলেস্টেরলকে পুরোপুরি ছেঁটে ফেললেও চলবে না। শরীরে বিভিন্ন হরমোন তৈরিতে প্রভাব ফেলে রক্তে মিশে থাকা ‘গুড’ কোলেস্টেরল। আমাদের শরীরে সাধারণত দু’ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন বা এলডিএল এবং হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন বা এইচডিএল। বেশি তেল, মশলা, ঘি, চর্বিজাতীয় খাবার খেলে শরীরে এলডিএল’এর মাত্রা বেড়ে যায়। এ দিকে এক জন পূর্ণবয়স্ক, কর্মক্ষম মানুষের প্রতি দিন গড়ে ৬০-৮০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। পুষ্টিবিদদের মতে, কিন্তু এমন কিছু প্রোটিন আছে যেগুলি প্রতি দিনের খাবারের তালিকায় যোগ করলে শরীরে বাড়তি মেদ জমতে পারে না। আবার এইচডিএল বা ‘গুড’ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করে।
‘গুড’ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে কী ধরনের প্রোটিন খাওয়া উচিত
প্রোটিন শরীরের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট। মাছ, মাংস, ডিম এবং দুগ্ধজাত খাবার প্রোটিনের উৎস। কিন্তু শরীরের কোলেস্টেরলের ঝুঁকি কমানোর কথা মাথায় আসে, তখন অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করতে হবে। মাংসে প্রোটিন বেশি থাকলেও, মাংস বেশি না খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। বদলে, বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণীজ প্রোটিন খাবার থেকে বেছে নিতে পারেন।
সামুদ্রিক মাছ
মাংস ছাড়া দিনের কোনও খাওয়ারই সম্পূর্ণ হয় না? মাংসের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে মাছ। মাছে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম এবং প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকেরেল এবং টুনার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায় এবং স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ডাল
প্রোটিনের সবচেয়ে ভাল উৎস হল ডাল। যাঁরা মাছ, মাংস খেতে ভালবাসেন না তাঁদের প্রতি দিনের খাবারে ডাল থাকা আবশ্যক। কারণ ডাল রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ডালে থাকা ফাইবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যকর ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে, হজমে সহায়তা করে। এ ছাড়া, বীনস্ বা শুটিজাতীয় খাবার খেলে শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়।
বাদাম এবং বিভিন্ন ধরনের বী়জ
বাদাম, পেস্তা, আখরোট, তিলের বীজ শরীরে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও বাদাম বা বীজে থাকা ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করতেও সাহায্য করে।
দানাশস্য
ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, ফাইবার এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর উপাদানে ভরপুর গম, যব, ভুট্টা, জোয়ার, বাজরার মতো দানাশস্যগুলি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।