আদা চা না কি গ্রিন টি, কার্যগুণের দিক থেকে কোনটি ভাল? ছবি: সংগৃহীত।
দুধ, চিনি দেওয়া ছোট এলাচ-ঘ্রাণে ভরপুর ঘন এক কাপ চা!
সে তো কবেই জীবন থেকে চলে গিয়েছে। এখন থাকার মধ্যে রয়েছে ‘রং চা’, মানে দুধ ছাড়া পাতলা লিকার। যার মধ্যে শুধু চা পাতার সুগন্ধটুকুই অবশিষ্ট থাকে। স্বাস্থ্যসচেতনদের মধ্যে আবার গ্রিন টি খাওয়ার প্রবণতা বেশি। আবার সাধারণ সর্দিকাশি নিরাময়ে আদা চায়ের ভূমিকাও অনস্বীকার্য। কিন্তু পুষ্টিগুণের দিক থেকে কোনটি ভাল?
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, আদা চায়ে ক্যাফিন নেই বললেই চলে। এক কাপ জলে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে ভাল করে ফুটিয়ে নিন। তার পর ছেঁকে নিয়ে হালকা গরম থাকতে থাকতেই খেয়ে ফেলুন। হজম এবং প্রদাহ সংক্রান্ত সমস্যা নিরাময়ে সাহায্য করে এই পানীয়টি। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতেও আদা দিয়ে তৈরি এই পানীয়ের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। ঠান্ডার সময়ে শরীর উষ্ণ রাখে আদা চা।
গাছ থেকে চা পাতা তোলার পর তাকে নানা রকম প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তবে গ্রিন টিয়ের ক্ষেত্রে পদ্ধতিটি একটু আলাদা। গ্রিন টিয়ের পাতাগুলি ‘আনঅক্সিডাইজ়ড’ থাকে। তাই এই ধরনের চায়ে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণও বেশি থাকে। চা পাতার তেমন সুগন্ধ থাকে না। উল্টে ঘাস-পাতার মতো গন্ধ পাওয়া যায়। সামান্য হলেও ক্যাফিন রয়েছে গ্রিন টি-র মধ্যে। সেই পরিমাণ ক্যাফিনের দৌলতে বিপাকহার থেকে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা— সবই উন্নত হয়।
তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, দু’ধরনের চায়েরই আলাদা আলাদা কার্যগুণ রয়েছে। আদা চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, হজমের গোলমাল নিয়ন্ত্রণ করে। সাধারণ সর্দিকাশি কিংবা শ্বাসযন্ত্রের কোনও সমস্যা হলেও আদা চা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
যাঁরা ওজন নিয়ে চিন্তিত, তাঁদের কাছে গ্রিন টি-র কদর বেশি। কারণ, এই চা বিপাকহার উন্নত করে। শরীরে জমা টক্সিন দূর করতেও সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করতেও এই চায়ের ভূমিকা রয়েছে।
গ্রিন টি না কি আদা চা, পানীয় হিসাবে কোনটি ভাল?
আদার মধ্যে রয়েছে ‘জিঞ্জারল’ এবং ‘শোগাওল’ নামক দু’টি প্রাকৃতিক উপাদান। ২০২২ সালে ‘ফুড কেমিস্ট্রি অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, আদায় যে দু’টি উপাদান রয়েছে, সেগুলি আসলে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টিভাইরাল হিসাবে দারুণ কার্যকরী।
আবার, গ্রিন টিয়ে এমন অনেক উপাদান রয়েছে, যা কোষের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। ২০২০-এ ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ মলিকিউলার সায়েন্সেস’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘এপিগ্যালোক্যাটকিন গ্যালেট’ নামক এই উপাদানটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ। শুধু তা-ই নয়, তা ক্যানসার প্রতিরোধীও।