কল্কি কেঁকলা। ছবি : সংগৃহীত।
কথাতেই আছে ‘মা হওয়া নয় মুখের কথা’! কিন্তু বলিউডের কিছু ‘ব্যতিক্রমী’ মা অভিযোগ করছেন, ইদানীং মাতৃত্বের বিষয়টিকে বড় বেশি নিখুঁত ভাবে পরিবেশন করা হয়। যেন গোটা প্রক্রিয়াটাই গোলাপি পালকে সাজানো নরম বিছানার মতো। পা ফেললেই স্বপ্নের মতো ন’টা মাস পার হয়ে যায়। কিন্তু আসলে তো ব্যাপারটা অত সহজ নয়! নায়িকাদের বক্তব্য, মা হওয়ার কঠিন দিকগুলোই বা সমাজের সামনে তুলে ধরা হবে না কেন?
এর আগে মা হওয়ার কঠিন দিক নিয়ে কথা বলেছিলেন মহারাষ্ট্রের অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে। তার জন্য বলিউড অনুরাগীদের একাংশ সমালোচনাও করেছিলেন নায়িকার। তাতে যদিও রাধিকা তাঁর অবস্থান বদলাননি। মাতৃত্ব নিয়ে রাধিকা বলেছিলেন, ‘‘কেউ বলে না, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সময় কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয় মহিলাদের। এটা আমার খুব অদ্ভুত লাগে। আমি তো সন্তানধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাবিইনি যন্ত্রণার কথা। শরীরে পরিবর্তন এলে কী কী হতে পারে, তা তলিয়ে দেখিইনি। কারণ, সেটা কেউ বলে না।’’ একই সুর শোনা গেল মাতৃত্ব নিয়ে অভিনেত্রী কলকি কেকলাঁর একটি মন্তব্যেও।
কল্কি চার বছরের সন্তানের মা। ২০২০ সালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন নায়িকা। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে নিজের মাতৃত্ব প্রসঙ্গে কল্কিকে বলতে শোনা যায়, ‘‘মাতৃত্ব মায়েদের থেকে অনেক কিছু নিংড়ে নেয়। ন’মাস নিজের শরীরে সন্তান ধারণ করা, প্রসব পর্ব এবং তার পরে প্রসবোত্তর পর্বে মায়েদের নিজেদের শরীর বলে কিছু থাকে না। মায়েদের শরীর তখন অন্য একটা মানুষের দাসত্ব করে। তাকে বাঁচিয়ে রাখার একটা আপৎকালীন প্রক্রিয়া হিসাবে কাজ করে। তখন শরীরের সমস্ত শক্তি, সমস্ত পুষ্টি শুধু সেই মানুষটার জন্য। শুধু তাকেই ভাল রাখার জন্য।’’
মাতৃত্বকালীন সময়ের স্মৃতি খুব বেশি পুরনো হয়নি কল্কির। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রসবের পরের ছ’টা মাস তো সত্যিই খুব কষ্টের ছিল। সারা রাত প্রায় জেগে। কখন মেয়ে উঠবে। উঠলেই তাকে স্তন্যপান করানো। তাকে ঘুম পাড়ানো। আমার সমস্ত পুষ্টি ওর শরীরে যাচ্ছে। আমার ঘুমের কোনও ঠিকঠিকানা নেই। মনে হত, আমার জীবনটা কোথায় গেল? আমি কে? আমার কি কোনও নিজস্বতা নেই! কোনও ইচ্ছে থাকতে নেই! সেই সময়টা খুব কষ্টের ছিল।’’ কল্কির কন্যার নাম সাফো। মা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে কল্কি বলেন, ‘‘এখন আমাদের খুবই ভাল জমে। কিন্তু তার মানে এই নয়, কষ্টগুলো হয়নি। অথচ মাতৃত্ব নিয়ে যাঁরা নানা কথা বলে বেড়ান, তাঁদের কাউকে এ নিয়ে কথা বলতে দেখিনি।’’