ছবি- প্রতীকী
জল খাওয়ার কিছু ক্ষণ পর তা শরীরের দূষিত পদার্থসমেত মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু এই স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় যখন ব্যাঘাত ঘটে, তখনই শারীরিক নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। যেমনটা হয়েছিল আমেরিকার বাসিন্দা এলি অ্যাডম্স-এর।
২০২০ সালে এলি অ্যাডাম্স এমনই একটি ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলেন। পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়ার পরও টানা ১৪ মাস মূত্রত্যাগ করতে পারেননি তিনি। বছর ৩০-এর এলি বলেন, “আমার কোনও দিন এমন কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। এক দিন ঘুম থেকে উঠে হঠাৎই আমি প্রস্রাব করতে পারছিলাম না। সেই ঘটনার পর থেকেই আমার জীবন সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছিল।”
‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’-এর তথ্য অনুযায়ী, মহিলাদের মূত্রথলিতে মূত্র ধারণ করার পরিমাণ ৫০০ মিলিলিটার এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে তা একটু বেশি। প্রায় ৭০০ মিলিমিটার। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, এলির মূত্রথলিতে নির্ধারিত পরিমাণের প্রায় দ্বিগুণ মূত্র থাকার কারণেই এমন বিরল সমস্যা দেখা দিয়েছিল। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে ‘ফোলার্স সিন্ড্রোম’ বলা হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে মূত্রত্যাগ করতে সমস্যা হয়। কিন্তু এই সমস্যা কেন হয়, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কেউই।
বাকি জীবন শরীরের সঙ্গে ‘ক্যাথিটার’ নিয়ে ঘোরা যখন প্রায় নিশ্চিত হয়ে যেতে বসেছিল, ঠিক সেই সময়ে এক দল চিকিৎসক এলির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। অস্ত্রোপচার করে মেরুদণ্ডের একেবারে শেষ প্রান্তে বিশেষ একটি যন্ত্র তাঁরা বসিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে মল বা মূত্র ত্যাগ করার অনুভূতিটুকু এলি বুঝতে পারেন। অস্ত্রোপচারের পর এলি বলেন, “টানা ১৪ মাস এই অবস্থা কাটানোর পর এখন আমি অনেকটাই সুস্থ বোধ করছি। নিজে থেকে প্রস্রাব করতেও বিশেষ অসুবিধা হচ্ছে না।”