মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস দেহের একটি অঙ্গ থেকে রক্তের মাধ্যমে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। ছবি- সংগৃহীত
টিবি বা যক্ষ্মার নাম শুনলে এখনও আঁতকে ওঠেন বেশির ভাগ মানুষ। ভারতে প্রতি বছর বহু মানুষের মৃত্যু হয় এই রোগে। কিন্তু অনেকেরই ধারণা, যক্ষ্মা শুধু ফুসফুসেই হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, যক্ষ্মা দেহের যে কোনও অঙ্গেই হতে পারে। যৌনাঙ্গে যক্ষ্মা বা টিউবারকুলোসিস কিন্তু মহিলাদের বন্ধ্যত্বের একটি অন্যতম কারণ। প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ মহিলা পালমোনারি টিউবারকুলোসিসের শিকার হন। এই যক্ষ্মা খুব সহজে ধরা পড়ে না। মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস দেহের একটি অঙ্গ থেকে রক্তের মাধ্যমে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। ফুসফুস, মস্তিষ্ক, কিডনি ছা়ড়াও গর্ভাশয়, জরায়ু, ফ্যালোপিয়ান টিউবেও হানা দিতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ফ্যালোপিয়ান টিউবের একটি অংশ ‘ব্লক’ হয়ে গিয়েছে। তাই ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বেরিয়ে আসতে পারে না। পুরুষদের ক্ষেত্রেও একই ভাবে এই রোগ হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, যক্ষ্মা প্রাথমিক ভাবে ফুসফুসকে আক্রান্ত করলেও সঠিক চিকিৎসা না হলে তা পরবর্তী কালে দেহের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এই ব্যাক্টেরিয়া যখন দেহের জনন অঙ্গে বাসা বাঁধে, তখন চিকিৎসা পরিভাষায় একে ‘জেনিটাল টিবি’ বলা হয়। ফলস্বরূপ মহিলা এবং পুরুষ উভয়েই বন্ধ্যত্বের শিকার হতে পারেন।
কোন কোন লক্ষণ দেখলে বুঝবেন মহিলাদের যৌনাঙ্গে যক্ষ্মা হতে পারে?
১) অনিয়মিত ঋতুস্রাব
২) যৌনাঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক তরল ক্ষরণ
৩) অনিয়মিত হৃদ্স্পন্দন
৪) তলপেটে ব্যথা
৫) রাতের দিকে হঠাৎ জ্বর আসা
৬) খিদে কমে যাওয়া
৭) সন্তানধারণে সমস্যা
৮) সঙ্গমের সময়ে তীব্র ব্যথা
৯) পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যাওয়া
যৌনাঙ্গের যক্ষ্মা কি চিকিৎসায় সেরে যেতে পারে?
দেহের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ার আগেই যদি যক্ষ্মা ধরা পড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে রোগ থেকে মুক্তি পেতে সময় লাগে ৬ থেকে ৮ মাস। সাধারণত ওষুধের দ্বারাই যক্ষ্মা পুরোপুরি নিমূর্ল করা সম্ভব। তবে, কার শরীরে যক্ষ্মার ব্যাক্টেরিয়া কোথায় লুকিয়ে রয়েছে এবং কত তাড়াতাড়ি তা ধরা পড়ছে, তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে।