৬ মিনিট হাঁটার পরীক্ষায় কী ভাবে বোঝা যাবে হার্টের অবস্থা কেমন? প্রতীকী ছবি।
বেশি ক্ষণ হাঁটতে হবে না। মাত্র ৬ মিনিট হাঁটলেই বোঝা যাবে হার্ট ও ফুসফুসের অবস্থা কেমন। শুধু তা-ই নয়, ৬ মিনিট কী ভাবে হাঁটছেন, কতটা হাঁটছেন তা দেখে নাকি এ-ও বোঝা যাবে যে, হৃদ্রোগের ঝুঁকি আছে কি না অথবা ফুসফুসে জটিল রোগ হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না। কেবল মিনিট ছয়েক একটানা হাঁটতে হবে না থেমে।
চিকিৎসকেরা বলেন ‘সিক্স মিনিট ওয়াকিং টেস্ট’। এই ৬ মিনিটের হাঁটাই নাকি বলে দিতে পারে, এক জনের শরীর কতটা সুস্থ ও তিনি শারীরিক ভাবে কতটা সক্রিয়। হার্টের অবস্থা জানতে ‘ট্রেডমিল টেস্ট’ করেন চিকিৎসকেরা, তবে এই ৬ মিনিটের হাঁটার পরীক্ষা নাকি অনেক বেশি নিরাপদ। যে কেউ এটি করতে পারেন।
৬ মিনিট হাঁটার পরীক্ষা কী?
খোলা জায়গায় হাঁটলে বেশি ভাল হয়। যেখান থেকে হাঁটা শুরু করবেন, সেখানে একটি চিহ্ন দিতে হবে। তার পর ৬ মিনিট টানা হাঁটতে হবে। মাঝে বিশ্রাম নিলে হবে না। বয়স, শারীরিক অবস্থা ইত্যাদির উপরেই হাঁটার গতি নির্ভর করবে। ৬ মিনিট পরে ঠিক কত দূরে পৌঁছলেন, সেখানে একটি চিহ্ন দিতে হবে। এ বার মাপতে হবে ৬ মিনিটে আপনি ঠিক কতটা দূরত্ব অতিক্রম করলেন।
কী বোঝা যাবে?
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ৬০ বছরের নীচে একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ৬ মিনিটে কম করে ৪০০-৭০০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে তারও বেশি। তাই এই মাপকে যদি নির্দিষ্ট করা হয়, তা হলে দেখতে হবে ৬ মিনিটে আপনি এর চেয়ে কম দূরত্ব অতিক্রম করলেন, না কি বেশি। যদি বেশি হয়, তা হলে বুঝতে হবে আপনার শরীর সুস্থ এবং হার্ট বা ফুসফুসের তেমন সমস্যা নেই।
যদি এর চেয়ে অনেকটাই কম দূরত্ব অতিক্রম করেন, তা হলে বুঝতে হবে হাঁটতে গেলে আপনার সমস্যা হচ্ছে। হার্টের রোগ, ফুসফুসের সমস্যা থাকলে অথবা ব্যথা-বেদনাজনিত সমস্যা থাকলে হাঁটার গতি কমে যাবে। ওজন বেশি হলে বা অন্য কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলেও এমন হতে পারে। হাঁটার সময় দেখতে হবে, বুক ধড়ফড় করছে কি না বা শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে কি না— তা হলে বুঝতে হবে, সমস্যা গুরুতর। যদি হাঁটার পরে হাঁপানির মতো টান ওঠে, তা হলে বুঝতে হবে ফুসফুসের হাল খুবই খারাপ। সিওপিডি বাসা বেঁধেছে কি না অথবা ফুসফুসে সংক্রমণজনিত অসুখ হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কতটা, তা-ও বোঝা যেতে পারে এই পরীক্ষায়। কী রকম? ৬ মিনিট হাঁটাহাঁটি করে পাল্স অক্সিমিটারে রিডিং নিতে হবে। যদি রিডিং ৯৩ শতাংশের কম আসে, তা হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। অনেকের অক্সিজেনের মাত্রা পাল্স অক্সিমিটারে মাপলে হয়তো স্বাভাবিক দেখায়। কিন্তু তাঁদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে কি না, তা বোঝার জন্য এই পরীক্ষা করে নেওয়া জরুরি। একে বলে ‘সাইলেন্ট হাইপক্সিয়া’। ৬০ বছরের বেশি বয়সিদের এই পরীক্ষা করে দেখা খুবই জরুরি। তা হলে আচমকা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে অনেকটাই। তবে সে ক্ষেত্রে বয়স্কেরা শরীর বুঝে ৬ মিনিট হাঁটবেন, না কি তার কম, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে।