প্রদীপের নীচে অন্ধকার?
২০২২ সালের শুরুতে বিস্ফোরণের মতো এসে পড়েছিল ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। কাশ্মীরের ইতিহাস চর্চায় উত্তাল হয়েছিল দেশ। পরিচালনায় বিবেক অগ্নিহোত্রী। ছবি ঘিরে যাবতীয় ঝড়ঝাপটা সামলে নিয়েছিলেন তিনি। তবে মুখ বন্ধ করেননি। বলিউডে কোথাও কোনও অনাচার দেখলেই তিনি স্পষ্ট বক্তব্য রাখেন। এ বারও রাখলেন। একের পর এক ছবির মুখ থুবড়ে পড়া, কাজ হারানোর বাজারে বলিউডের আসল চেহারা তুলে ধরতে চাইলেন বিবেক।
সম্প্রতি বিবেক একটি দীর্ঘ লেখা টুইট করেছেন বলিউড প্রসঙ্গে তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে। লেখাটিতে বিবেক জানিয়েছেন, তিনি বলিউডের নেপথ্যকাহিনি শোনাচ্ছেন আজ। বলিউড কেবল প্রতিভা প্রকাশের জায়গা নয়, প্রতিভা বিসর্জনেরও। কত উচ্চাশা নিয়ে তরুণ মুখের দল ভিড় করে বলিউডে। কিন্তু তার পরই স্রোতে খড়কুটোর মতো ভেসে যায়।
মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে উচ্চাশা, স্বপ্ন সব তলিয়ে যেতে থাকে। আরও মাদক কিনতে আরও টাকার দরকার হয়ে পড়ে। যার পরিণামে দুষ্টচক্রে জড়িয়ে পড়া ছাড়া তাঁদের সামনে অন্য পথ খোলা থাকে না। সাফল্য অর্জন তখন লক্ষ্য থেকে সরে যায়। দুয়েকটি সফল কাজের পরই কেরিয়ার শেষ হয়ে যায় বহু অভিনেতার।
‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পরিচালক লিখেছেন, “আপনি যা দেখছেন, তা বলিউড নয়। বাস্তবের বলিউডকে খুঁজে পাওয়া যাবে অন্ধকার গলিতে। এই অন্ধকার গলিতে আপনি খুঁজে পেতে পারেন ছিন্নভিন্ন, পদদলিত, সমাহিত স্বপ্ন। বলিউড যদি প্রতিভার জাদুঘর হয়, তবে প্রতিভার কবরখানাও বটে। এটা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ব্যাপারে বলছি না। যে-ই এখানে আসে, জানে যে প্রত্যাখ্যান চুক্তিরই অংশ। কিন্তু সম্মান, আত্মমর্যাদা এবং আশা ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। কোনও মধ্যবিত্ত যুবক কখনও এমন অবস্থায় থাকার কথা কল্পনাও করে না, যে ভাবে বলিউডে এসে থাকতে হয়।’’
বহু সংগ্রামের পর সাফল্য না-ও আসতে পারে। যাঁদের আসে না, তাঁদের সম্পর্কে বিবেক লিখেছেন, ‘‘সব কিছু এতটাই আঘাত করে যে, লড়াই করার পরিবর্তে অনেকে হাল ছেড়ে দেন। ভাগ্যবান তাঁরা, যাঁরা ঘরে ফিরে যান। যাঁরা থাকেন, ভেঙে চুরমার হয়ে যান।’’
বিবেকের এই বিস্ফোরক লেখাটিতে বলা রয়েছে আপাত-সফলদের বৃত্তান্তও। ক্ষণিকের উজ্জ্বলতার পর প্রদীপের নীচের অন্ধকারের মতোই ইন্ডাস্ট্রির কদর্য দিকটি যাঁদের দৌলতে দৃশ্যমান হতে থাকে।