বিরতির পর বুধবার টলিপাড়ায় শুটিং শুরু হল। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সপ্তাহের প্রথম দু’দিন স্টুডিয়োপাড়া ছিল কার্যত স্তব্ধ। মঙ্গলবার রাতে পরিচালকেরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিতেই নির্মাতারা কাজে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করেন। রাতের মধ্যেই বিভিন্ন শিল্পীর কাছে কল টাইম পৌঁছে যায়। বুধবার সকাল থেকেই ধীরে ধীরে চেনা ছন্দে ফিরতে শুরু করে টলিপাড়া। কোথায় কোথায় কী ভাবে শুটিং হল, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন?
বুধবার টলিপাড়ায় প্রায় সব ধারাবাহিকের শুটিংই হয়েছে। সকালে টলিপাড়ার বিভিন্ন ফ্লোরে কল টাইম অনুযায়ী উপস্থিত হতে শুরু করেন শিল্পী ও কলাকুশলীরা। কারণ, দু’দিনের বিরতির পর অনেকেই নতুন এপিসোড দ্রুত ব্যাঙ্কিং করে নিতে চেয়েছেন। জ়ি বাংলার ‘নিম ফুলের মধু’, ‘ফুলকি’, ‘পুবের ময়না’, ‘জগদ্ধাত্রী’, ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’-সহ একাধিক ধারাবাহিকের শুটিং হয়েছে। পাশাপাশি খোঁজ নিয়ে জানা গেল, রাজারহাটের ডিআরআর স্টুডিয়োয় চ্যানেলের রিয়্যালিটি শো ‘সারেগামাপা’-এর শুটিংও হয়েছে জোরকদমে। ভারতলক্ষ্মী স্টুডিয়োয় ‘পূবের ময়না’ ধারাবাহিকের শুটিং চলছিল। ধারাবাহিকের এপিসোডের ব্যাঙ্কিং বিশেষ একটা ছিল না। তাই কারও দম ফেলার সময় নেই। এক ফাঁকে ধারাবাহিকের অভিনেতা গৌরব রায়চৌধুরী বললেন, ‘‘দু’দিন পর আবার ফ্লোরে ফিরে ভাল লাগছে। কিন্তু আজ শুরু থেকেই খুব চাপের মধ্যে আমরা শুটিং করছি। চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব কাজ এগিয়ে রাখতে।’’
অন্য দিকে, স্টার জলসার ‘উড়ান’ ধারাবাহিকের শুটিং হয়েছে দাসানি১-এ। পার্পল মুভি টাউনে হয়েছে ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র শুটিং। শুটিংয়ে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত ‘শুভ বিবাহ’ ধারাবাহিকের নায়িকা সোনামণি সাহা। তারাতলা ভিলাইন স্টুডিয়োর শটের ফাঁকে বললেন, ‘‘শুটিং বন্ধ থাকবে জেনে খুব টেনশন হচ্ছিল। এত দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়েছে বলে এখন খুবই ভাল লাগছে।’’ সোনামণি জানালেন, কিছু এপিসোড তাঁদের তৈরি ছিল। তবে, শুটিং আরও কয়েক দিন বন্ধ থাকলে তাঁরা সমস্যায় পড়তে পারতেন। তাঁর কথায়, ‘‘এখন আর কোনও কিছু না ভেবে কাজে মন দিতে চাই।’’
বুধবার কালার্স বাংলার ‘সোহাগ চাঁদ’ ও ‘ফেরারি মন’ ধারাবাহিক দুটোর শুটিং হয়েছে যথাক্রমে ইন্দ্রপুরী ও চিত্রায়ণ স্টুডিয়োয়। অন্য দিকে, সান বাংলার ‘কনস্টেবল মঞ্জু’, ‘আকাশ কুসুম’, ‘দ্বিতীয় বসন্ত’— ধারাবহিকগুলিরও এর শুটিং হয়েছে নিয়মমাফিক।
বুধবার ফ্লোরে ফ্লোরে ছিল খুশির আমেজ। ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক সুজিতকুমার হাজরা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘ সকাল থেকে সব ফ্লোরে আগের মতোই শুটিং শুরু হয়েছে। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। সকলেই আবার ফ্লোরে ফিরে খুশি।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টেকনিশিয়ানের কথায়, ‘‘কাজ বন্ধ রেখে বাড়িতে বসে থাকতে ভাল লাগে না। আমাদের জীবনই তো শুটিং ফ্লোর। আবার কাজে ফিরে ভাল লাগছে।’’
টলিপাড়ায় শুটিং শুরু নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন দেব। মঙ্গলবার তিনি পরিচালকদের সাংবাদিক বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন। তবে, বুধবার তিনি ‘খাদান’-এর শুটিংয়ে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়াও বুধবার টলিপাড়ায় কিছু নতুন কনটেন্টের শুটিং হয়েছে বলে খবর।