টলিউডের ‘রাত দখল’ নিজস্ব চিত্র।
কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা। এ ভাবেই রবিবার পায়ে পা মেলালো মহানগর। শেষে ধর্মতলায় সমাবেশ মঞ্চে জনতার উপস্থিতি। সেখান থেকেই সাধারণ থেকে তারকা প্রত্যেকের বার্তা, “শেষ দেখে ছাড়ব।” কথা ছিল, নিজেদের দাবি দাওয়া, বক্তব্য পেশ, গানের সুর-নাচের তালে, মূকাভিনয়ের ছন্দে প্রতিবাদ চলবে। কিন্তু রাত জাগার কোনও পরিকল্পনাই ছিল না।
সন্ধ্যা গড়াতে পরিস্থিতি বদলায়। ধর্নায় বসেন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা। জন সাধারণের সঙ্গে রাত জাগবেন টলিউডের খ্যাতনামীরা। ঠিক হয়েছে, ভোর ৪টে পর্যন্ত ধর্না চলবে। ধর্নার সময় আরও বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে। পথেই বসে পড়েছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, বিদীপ্তা চক্রবর্তীরা। তাঁদের ঘিরে বিরসা দাশগুপ্ত, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, দেবলীনা দত্ত, রাতাশ্রী দত্ত-সহ আরও অনেকে। বিরসা জানান, পাঁচ দফা দাবিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী ও শিশু শিক্ষা দফতর এবং পরিবহন মন্ত্রকে ইমেল করা হয়েছে। জবাবের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। যতক্ষণ পর্যন্ত না জবাব মিলছে, উঠবেন না কেউ।
এ দিনের ‘মহামিছিল’এর আয়োজক ‘আমার তিলোত্তমা’ মঞ্চ। এই মিছিলে পা মেলান অপর্ণা সেন, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, মধুরিমা গোস্বামী প্রমুখ। মিছিলে হাঁটতে হাঁটতেই সকলে বলেছেন, ‘‘৫ সেপ্টেম্বরের অপেক্ষা। তার মধ্যে জবাব মিললে ভাল। নইলে প্রয়োজনে আরও বড় আন্দোলন।’’ পাশাপাশি, ২ সেপ্টেম্বর লালবাজার অভিযান, ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় ঘরের আলো নিভিয়ে মোমবাতি হাতে রাতে নামার আহ্বান জানানো হয় ‘আমরা তিলোত্তমা’ মঞ্চ থেকে। ধর্মতলার সমাবেশে মধুরিমার মূকাভিনয় দলের শিল্পীরা তাঁদের মতো করে প্রতিবাদ জানান। উপস্থিত প্রত্যেকে গলা মেলান অরিজিৎ সিংহের গাওয়া গানে। এর পরেই সমাবেশ মঞ্চ থেকে ঘোষণা, ভোর ৪টে পর্যন্ত চলবে ধর্না।
কেন? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলে টলিউডের চেনামুখ রাতাশ্রী দত্তের সঙ্গে। একাধিক প্রতিবাদ মিছিলে পা মিলিয়েছেন তিনি। রাতাশ্রী বলেন, “আমাদের দাবি এবং নির্যাতিতার বিচার চেয়ে রাজ্যের প্রথম সারির একাধিক আধিকারিককে মেল পাঠানো হয়েছে। তার উত্তর না মেলা পর্যন্ত সকলে রাত জাগবেন।” তাঁর আশা, হয়তো রবিবার রাতের মধ্যেই তাঁরা কোনও না কোনও উত্তর পাবেন। যদি না মেলে? তা হলে কি তাঁরা ধর্না চালিয়ে যাবেন? অভিনেত্রী জানান, এখনও সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সঙ্গে আফসোস করেছেন, “একদিকে আমরা প্রতিবাদের পর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অন্য দিকে সমাবেশেই মেয়েদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে।” তাঁর দাবি, রবিবারও ধর্মতলার সমাবেশে এক তরুণী নিগৃহীত হন। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা জড়িতদের ধরতে পারেননি বলেও অভিযোগ তাঁর।