টলিউড বন্ধুত্বে বিশ্বাসী?
একটা সময় মিমি চক্রবর্তী-নুসরত জহানদের বন্ধুত্ব নিয়ে চর্চা হত। তাঁরা ‘বন্ধু’ থেকে ‘বোনুয়া’ হয়ে গিয়েছিলেন। সম্পর্কের সেই জোয়ার অনেকটাই নাকি স্তিমিত। একই ভাবে তনুশ্রী চক্রবর্তী, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, পার্নো মিত্র, পায়েল সরকার মিলে বিশাল ‘গার্লস গ্যাং’ তৈরি হয়েছিল। আপাতত সেই বন্ধুত্ব সীমাবদ্ধ তনুশ্রী, নুসরত, শ্রাবন্তীর মধ্যে। বন্ধুত্বে আদৌ বিশ্বাস করে টলিউড? বন্ধুত্ব উদ্যাপিত হয় মায়া দুনিয়ায়? নায়ক-নায়িকাদের রাত তিনটের বন্ধু আছেন? না কি, পেশাদার দুনিয়ায় কেবলই পারস্পরিক শত্রুতা! একে অন্যকে টপকে যাওয়ার প্রবণতা। বন্ধুত্বের আড়ালে জন্ম নেয় ঈর্ষা, রাজনীতি। বন্ধুত্ব দিবসে কী বলছেন অভিনয় আঙিনার জনপ্রিয় তারকারা? আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল স্বস্তিকা দত্ত, রিয়াজ লস্কর, অলিভিয়া সরকার, দিব্যজ্যোতি দত্তের সঙ্গে।
পেশাদার জীবনে বন্ধুত্ব হয়? প্রশ্ন রাখতেই স্বস্তিকার সপাট জবাব, ‘‘বন্ধুত্বের সঙ্গে অনেক সময়েই অযাচিত ভাবে শত্রুতা যেচেই চলে আসে। তাই একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে সাধারণত না বেরোনোরই চেষ্টা করি।’’ নায়িকার তাই ইন্ডাস্ট্রিতে চেনা লোকের সংখ্যা অনেক। জানেন হাতেগোনা কিছু মানুষকে। আর রাত তিনটের বন্ধু? তিনি কি শোভন গঙ্গোপাধ্যায়? এ বারেও অকপট স্বস্তিকা, ‘‘শোভন তো আমার ২৪ ঘণ্টার বন্ধু! রাতদিন ওর সঙ্গে আমি। আমার রাত তিনটের বন্ধু সত্যিই তেমন কেউ নেই। তবে আমি অনেকের এই বিশেষ সময়ের বন্ধু হয়ে উঠেছি।’’
স্বস্তিকার একেবারে বিপরীত মেরু রিয়াজ লস্কর। পেশা দুনিয়াতেও বন্ধু হয়, বিশ্বাস করেন তিনি। ধারাবাহিক ‘গাঁটছড়া’য় রিয়াজ ওরফে ‘কুণাল’ আর বনির বন্ধুত্ব উদাহরণ তৈরি করেছে। বাস্তবেও কি মেয়েরা এতই ভাল বন্ধু রিয়াজের? অভিনেতার কথায়, ‘‘বনি ওরফে অনুষ্কা গোস্বামী সত্যিই খুব ভাল বন্ধু। আমার জন্য টিফিন নিয়ে আসে। অনেক সমস্যা সামলে দেয়। অনুষ্কার মতোই ভাল বন্ধু গৌরব চট্টোপাধ্যায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, শোলাঙ্কি রায়, শ্রীমা ভট্টাচার্য।’’ রিয়াজের রাত তিনটের বন্ধুও টেলি পাড়ারই। অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তী আর পর্দার ‘কুণাল’ নাকি হরিহর আত্মা! কাজে, অ-কাজে ডাকলেই নাকি সায়ককে পাশে পান তিনি। তার পরেও রিয়াজের দাবি, স্কুলের বন্ধুদের মতো কেউ হয় না।
অলিভিয়া সরকার প্রেমে বহু ব্যথা সয়েছেন। বন্ধুত্বে? অভিনেত্রীর দাবি, ‘‘বন্ধুত্ব করলেই বাঁশ ফ্রি! ওটা নিজে থেকেই হয়ে যায়।’’ টলি পাড়ার একাধিক জন তাঁকে যেমন ব্যথা দিয়েছেন। তেমনই বন্ধুর ছদ্মবেশে শত্রুতাও করেছেন। অলিভিয়া তার পরেও নাকি মাপজোক করে মিশতে পারেন না। ‘‘ওই জন্যই যারা পাশে থাকে তারা আমার ভাল-মন্দ সবটাই ভাগ করে নেয়। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে বাজার-হাট, মুদির দোকান— সবই করে দেয়’’,— বলেছেন অলিভিয়া। তবে এঁরা টলিউডের কেউ নন।
দিব্যজ্যোতিও বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। পেশাদার দুনিয়া হোক বা স্কুল-কলেজ জীবন— সব জায়গাতেই তাই তাঁর রোজই ‘ফ্রেন্ডশিপ ডে’! এমনকি, জিমখানাতেও একাধিক প্রশিক্ষক অভিনেতার খুব ভাল বন্ধু। সেটে সব চেয়ে বেশি খুনসুটিতে মাতেন পর্দার স্ত্রী স্বস্তিকা ঘোষের সঙ্গে। আর রোশনী ভট্টাচার্য? খবর, বিমানসেবিকার প্রশিক্ষক নিতে নিতেও নাকি দিব্যজ্যোতির টানেই তিনি ফের অভিনয় দুনিয়ায়? লাজুক হেসে অভিনেতার দাবি, ‘‘রোশনির সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব শরীরচর্চা করতে গিয়ে। অবশ্যই আমরা ভাল বন্ধু। তবে আমার টানে রোশনি অভিনয়ে ফিরে এসেছে, এটা একদম ভুয়ো!’’