পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের উপর ফেডারেশনের (ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া) নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে টলিপাড়ার পরিচালকেরা যে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছেন, সে খবর আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। বৃহস্পতিবার বিকালে রাহুল সংক্রান্ত আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন অঞ্জন দত্ত, রাজ চক্রবর্তী, অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী, ইন্দ্রাশিস আচার্য-সহ টলিপাড়ার একাধিক পরিচালক। উপস্থিত ছিলেন রাহুলও।
বৃহস্পতিবার বৈঠকের আগে ‘ডিএইআই’ (ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া) সদস্যদের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে রাহুল বনাম ফেডারেশনের মতানৈক্যের বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়। এর আগে রাহুলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর ছবির প্রযোজনা সংস্থার তরফে জানানো হয়, ছবিতে রাহুল সৃজনশীল প্রযোজক হিসেবে যুক্ত থাকবেন। কিন্তু তাতেও বাধ সাধে ফেডারেশন। বৃহস্পতিবার ডিরেক্টরস গিল্ড তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘‘আমাদের এখনও বক্তব্য, ছবি যেন বন্ধ না করা হয়। রাহুল পরিচালনা না করে অন্য কোনও পদে থাকলে আমাদের তরফ থেকে কোনও আপত্তি থাকবে না।’’
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বৈঠকে প্রায় ৭০ জন পরিচালক রাহুলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সমর্থনে স্বাক্ষর করেন। সিদ্ধান্ত হয়, ফেডারেশন রাহুলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা না তুললে পরিচালকেরা ফেডারেশনের ছাতার নীচ থেকে বেরিয়ে আসবেন। বৃহস্পতিবার পরিচালকদের কয়েক ঘণ্টার বৈঠক গড়ায় সন্ধ্যা পর্যন্ত। তার পর, সংস্থার প্রেসিডেন্ট সুব্রত সেন এবং সেক্রেটারি সুদেষ্ণা রায় ফেডারেশন কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। জানা যায় রাহুল সৃজনশীল প্রযোজক হিসেবে ছবিতে কাজ করতে পারবেন। কয়েক ঘণ্টার বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে সুদেষ্ণা বলেন, “সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আপাতত রাহুল ক্রিয়েটিভ প্রডিউসার হিসেবে কাজ করতে পারবে। ছবিটি পরিচালনা করবেন সৌমিক হালদার।” ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনওই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ বন্ধ রাখা সমর্থন করেন না। সেই ভাবনা থেকেই আমরা আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তবে রাহুলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠবে কি না, সেই বিষয়টি ফেডারেশন আপাতত ডিরেক্টরস গিল্ডের উপরেই ছেড়ে দিয়েছে। ২৭ জুলাই থেকে ছবিটির শুটিং শুরু হবে।
ফেডারেশনের তরফে রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাদের না জানিয়ে রাহুল বাংলাদেশে একটি ছবির শুটিং করেছেন। তার পর সংস্থার তরফে পরিচালককে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তার পরেই পরিচালকদের সংগঠন রাহুলের সমর্থনে সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ জানায়। রাহুলের ছবিটি আগামী পুজোয় মুক্তি পাওয়ার কথা। তাই এই ছবি তৈরি না হলে যে ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি হবে, তেমনই মনে করছিল সংশ্লিষ্ট মহল। এখন দু’পক্ষের আলোচনায় জটিলতা কাটায় খুশির আবহ টলিপাড়ায়।