পুজোয় কলকাতার অন্যান্য সিনেমা হলের পাশাপাশি খোলা থাকছে নন্দন। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
হাতে আর মাত্র এক দিন। তার পরেই পুজোর বাজার মাত করতে হাজির হবে চারটি বাংলা ছবি। টলিপাড়ায় শেষ মুহূর্তে নির্মাতারা জল মেপে নিতে ব্যস্ত। কেমন চলছে অগ্রিম বুকিং বা কোথায় হলের সংখ্যা বাড়ানো যায়, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এর মধ্যেই খুশির খবর, পুজোয় কলকাতার অন্যান্য সিনেমা হলের পাশাপাশি খোলা থাকছে নন্দন। ফলে বাংলা ছবি যে সিনেমা হলে জায়গা পাচ্ছে না, সেই অভিযোগ কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করছেন ইন্ডাস্ট্রির একাংশ।
৭ অক্টোবর থেকে মেরামতির জন্য নন্দনে ছবি প্রদর্শন বন্ধ রয়েছে। তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বুধবারের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। সেই মতো পুজোর ছবি দেখানোর পরিকল্পনাও শুরু হয়েছে। ওই সূত্রের দাবি, শুধুমাত্র বিজয়া দশমীর দিন নন্দন বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০১৯ সাল ছিল কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের রজত জয়ন্তী বছর। সেই বছর দুর্গাপুজোর সময় মেরামতির জন্য নন্দন বন্ধ ছিল। তবে ছবি দেখানো হয়েছিল রবীন্দ্রসদনে। করোনার বছরে সরকারি নির্দেশিকা মেনেই নন্দনে কাজ হয়েছে। এমনকি, গত বছরও দুর্গাপুজোর সময় নন্দনে ছবি দেখানো হয়েছে। ওই সূত্রের দাবি, সময় মতো কাজ শেষ করা গেলে আগামী শুক্রবার থেকেই আবার নন্দনে ছবি দেখানো শুরু হবে। তবে পুজোর চারটি ছবিই সেখানে দেখানো হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রত্যেক পরিচালক বা নির্মাতাই চান, যাতে নন্দনে তাঁর ছবিটি দেখানো হয়। তাই পুজোর সময় নন্দনের দরজা খোলা থাকাকে ইতিবাচক হিসাবেই দেখছেন অনেকে। পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে অরিন্দম শীল পরিচালিত ছবি ‘জঙ্গলে মিতিন মাসি’। পরিচালকের কথায়, ‘‘আমি নিজে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে অনুরোধ করেছিলাম। নিশ্চয়ই আরও অনেকেই অনুরোধ করেছেন। সরকার যদি এ ভাবে বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ায় তার থেকে আর ভাল কিছু হতে পারে না।’’ তবে শুধু নন্দন নয়, অরিন্দমের দাবি, এই বছর পুজোয় চারটি বাংলা ছবিকেই সর্বত্র সমান প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ জন্য ছবির পরিবেশক এবং হল মালিকদের আলাদা করে ধন্যবাদ জানাতে চাইলেন তিনি।
পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘রক্তবীজ’। পুজোয় যদি নন্দন খোলা থাকে, তা হলে সেটা যে প্রযোজকদের পক্ষে বাড়তি সুবিধা, তা মেনে নিচ্ছেন শিবপ্রসাদও। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার বাংলা সিনেমার স্বার্থে অজস্র ক্ষেত্রে উদ্যোগী হয়েছে। প্রথমত, পুজোর সময় বহু মানুষ বাইরে থেকে এসে কলকাতায় সিনেমা দেখেন। দ্বিতীয়ত, নন্দনের টিকিটের দাম তুলনানূলক ভাবে কম হওয়ায় দর্শকরা হলমুখী হন।’’ একই সঙ্গে শিবপ্রসাদ বললেন, ‘‘পুজোর সময় বহু সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। সেখানে শুধুমাত্র বাংলা ছবির কথা ভেবে নন্দন খোলা রাখার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি নন্দনের কর্মীরা, যাঁরা পুজোর সময় ছুটির দিনেও বাংলা ছবির কথা ভেবে নিরলস পরিশ্রম করবেন, তাঁদেরকেও সাধুবাদ জানাতে চাই।’’
দক্ষিণ কলকাতার নবীনা সিনেমা হলে নাকি ‘রক্তবীজ’ ছবিটি কোনও শো পায়নি। শিবপ্রসাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা তো মেনকায় দুটো শো পাচ্ছি। প্রিয়াতেও আমাদের ছবি রয়েছে। তাই মনে হয় না, কোনও অসুবিধা হবে।’’