jishu sengupta

Jisshu Sengupta: যিশুদা গাইছেন ‘বড় একা লাগে’, একমনে শুনছেন অঞ্জনা ভৌমিক! জন্মদিনে শোভনের স্মৃতিচারণ

অঞ্জনা ভৌমিক-যিশু সেনগুপ্তের সম্পর্কটাও ভারী সুন্দর। যেন মা-ছেলে আর শাশুড়ি-জামাইয়ের ‘কম্বো প্যাক’! দু’তরফেই মিষ্টি শাসন রয়েছে।

Advertisement
শোভন গঙ্গোপাধ্যায়
শোভন গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২২ ১৩:২৯
যিশু সেনগুপ্ত  এবং শোভন গঙ্গোপাধ্যায়।

যিশু সেনগুপ্ত এবং শোভন গঙ্গোপাধ্যায়।

আমি তখন ‘সারেগামাপা’-র প্রতিযোগী। যিশু সেনগুপ্ত সঞ্চালক। তখন থেকে দেখেছি, যিশুদার মধ্যে একটা ব্যাপার আছে। তাঁকে সামনে পেলে আট থেকে আশির পাগলামি দেখার মতো। আমি সাক্ষী। ‘বাবা বেবি ও’-র প্রচারে একসঙ্গে বেরিয়ে। না, কেউ ওঁর হাত ধরে টানাটানি করে না। কেউ ওঁকে ছুঁয়ে দেখতেও চায় না। বা ওঁর জামা ধরল— এমনও নয়। যিশুদা মঞ্চে উঠছেন, সারা প্রেক্ষাগৃহ হইহই করে উঠল। উনি হাসিমুখে জোড়হাতে সবার সামনে এসে দাঁড়ালেন। মেয়েরা বুকে হাত চেপে ধপাস করে বসে পড়লেন!

এ হেন যিশুর কি কখনও কাউকে ভাল লেগেছে? রিয়্যালিটি শো বা ছবির প্রচারে বেরিয়ে, কিংবা শ্যুটের অবসরে? আড়চোখে চেয়ে দেখা তাঁকে— বিশ্বাস করুন, আজ পর্যন্ত যিশুদাকে ঝারি মারতে দেখলাম না! কোনও মেয়ে বা ছেলেকে ভাল লাগলে সরাসরি বলেন, ‘‘ভাই একে আমার ভাল লেগেছে।’’ আমার সঙ্গে যিশুদার সখ্য বহুদিনের। কিন্তু বন্ধুত্ব সাময়িক। ব্যান্ডে কাজ করতে গিয়ে। তাই আমার দেখার বাইরেও কিছু ঘটেছে কি না, জানি না। যিশুদাকে ঘরোয়া পার্টিতে দেখেছি, কাজের পরিবেশেও দেখেছি— মজা করেন, রসিকতা করেন। তাই বলে বেসামাল? আজ পর্যন্ত নয়।

Advertisement

তাঁর সঞ্চালনা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। নিন্দকদের কথায়, তিনি নাকি রিয়্যালিটি শো-তে ভাঁড়ামো করেন! আমি বলব, ওই রসিকতাটুকুর জোরেই ‘সারেগামাপা’ এত জনপ্রিয়। গত বারের তুলনায় এ বারে ‘সুপার সিঙ্গার’ দর্শক-শ্রোতা দেখছেন বেশি। আসলে, যিশুদা খুব দ্রুত সকলের সঙ্গে মিশতে পারেন। ফলে, ওঁকে সবাই সব কথা বলে। প্রেম থেকে গান— যিশুদার অনায়াস গতি। সে সব নিয়ে সুযোগ পেলে মজা করতেও ছাড়েন না। আপনারাই বলুন তো, শুধুই যদি পরপর গান হতে থাকে, ভাল লাগবে? বরাবর গানের রিয়্যালিটি শো-এর সঞ্চালক। নিজে ড্রাম বাজান। ব্যান্ড রয়েছে। অনেকে জানতে চান, যিশুদা তা হলে নিশ্চয়ই গান জানেন! গুনগুন করেন নাকি কখনও?

হ্যাঁ, করেন তো। সুযোগ পেলেই গলা ছেড়ে ‘ইয়াদ আ রহা হ্যায়’ গানটা শো-তে গেয়ে ওঠেন। আর বাড়িতে ওঁর গলায় শুনেছি ‘চৌরঙ্গী’ ছবিতে উত্তমকুমারের লিপে মান্না দে-র গাওয়া বিখ্যাত গান, ‘বড় একা লাগে’। সেই ছবির নায়িকা অঞ্জনা ভৌমিক ওঁর শাশুড়ি। দেখেছি, যিশুদা যখন গানটা গেয়ে ওঠেন, নিজের ঘর থেকে ধীর পায়ে বেরিয়ে এসে বসেন তিনি। চোখ বুজে শোনেন। পাশে দাঁড়িয়ে নীলাঞ্জনা সেনগুপ্ত। অদ্ভুত একটা পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়। অঞ্জনা ভৌমিক-যিশু সেনগুপ্তের সম্পর্কটাও ভারী সুন্দর। যেন মা-ছেলে আর শাশুড়ি-জামাইয়ের ‘কম্বো প্যাক’! দু’তরফেই মিষ্টি শাসন রয়েছে। যেহেতু বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অসুস্থ, তাই ওঁর প্রতি যিশুদার যত্ন দেখার মতো।

আসলে যিশুদা মানুষটাই খুব পরিবারকেন্দ্রিক। স্ত্রী, দুই সন্তান, শাশুড়ি, তাঁদের খুঁটিনাটি নিয়েই বাঁচেন। ঘরোয়া পার্টিতে দেদার খাচ্ছেন। আবার বাড়তি ক্যালোরি ঝরাতে বাড়ির জিমে প্রচণ্ড শরীরচর্চা। বাড়ির মধ্যেই ওঁর সব কিছু। কলকাতায় থাকলে কাজ আর বাড়ি, এই ওঁর রুটিন। আমি নিশ্চিত, ১৫ মার্চ, আজ ওঁর জন্মদিনেও তেমনই কিছু হবে। শুনেছি, আজ সারাদিন শ্যুটের ব্যস্ততা। সন্ধেয় বাড়ি ফিরে নির্ঘাৎ আর বাইরে পা রাখবেন না যিশুদা। পার্টি, হল্লাগুল্লা— সব বাড়িতেই!

আরও পড়ুন
Advertisement