শোভন গঙ্গোপাধ্যায় (বাঁদিকে) ও দুর্নিবার সাহা। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
ছবির গানের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে স্বতন্ত্র গান? এই প্রশ্ন প্রায়শই উঁকি দেয় বাংলা সঙ্গীত মহলে। এই তর্কের মধ্যে সম্প্রতি একটি এমনই গান মুক্তি পেয়েছে। ‘এক ইচ্ছেডানা’। গেয়েছেন এক ঝাঁক নতুন প্রজন্মের শিল্পী। দুর্নিবার সাহা, শোভন গঙ্গোপাধ্যায়, তৃষা চট্টোপাধ্যায়, উজ্জয়িনী মুখোপাধ্যায়, গৌরব সরকার, চন্দ্রিকা ভট্টাচার্য।
নতুন প্রজন্ম কি স্বতন্ত্র গানের প্রতি উদাসীন? এই প্রসঙ্গে শোভনের বক্তব্য, ‘‘ছবির গানের সাফল্য নিয়ে ওয়াকিবহাল নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা। তাই সে দিকেই ঝুঁকছেন তাঁরা। সময়ের সঙ্গে শিল্পের চাল, গড়ন, আকারে বদল এসেছে, এ ভাবেই দেখা উচিত বিষয়টিকে। তবে স্বতন্ত্র গান আবার ফিরে আসছে। আসলে এখন গানকে ছবি ছাপিয়ে যাচ্ছে।’’
সমাজমাধ্যমের জমানায় বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে গান পৌঁছে দেওয়ার অস্ত্র হাতের মুঠোয়। তবু এই গানের শ্রোতার সংখ্যা আশানুরূপ হল না কেন?
দুর্নিবারের উত্তর, “শ্রোতাদের কাছে সবটা পৌঁছে দেওয়া খুব কঠিন। ‘বুস্ট’ না করা হলে সমাজমাধ্যমেও গান পৌঁছনো যায় না। আর এই ইউটিউব চ্যানেলটিও নতুন। ফলে যা হয় আর কী!”
তবে কি নতুন এই ইউটিউব চ্যানেলের জন্য গানের ক্ষতি হল? গানে কি কোথাও কোনও খামতি নেই? দুর্নিবারের কথায়, “আমি এই বিতর্কে যেতে চাই না। নতুন চ্যানেল গান প্রকাশ করছে এটা তো ভাল। কিছু ক্ষেত্রে ভাগ্যের জোরেও গান ভাইরাল হয়। যেমন সম্প্রতি ‘চোর’ গানটি ভাইরাল হল।”
এই লেখায় আলোচিত গানটির নিজস্ব কথালিপির সঙ্গে আকস্মিক ভাবে ‘হৃদ মাঝারে’ গানের লাইন জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে কি মেলবন্ধনের খানিক অভাব ঘটেছে?
দর্শকের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতেই ‘হৃদ মাঝারে’ গানের সংযোজন, জানালেন গানটির সুরকার শমীক গুহ রায়। সেই সংযোগ স্থাপনে কোথায় কি ঘাটতি থেকে গেল?
আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নে শমীকের উত্তর, “দর্শকের ধৈর্য কমে গিয়েছে। অনেক বিকল্প সমাজমাধ্যমে একটা গান শেষ হতে না হতেই, অন্য গানে ঢুকে পড়ছেন মানুষ।” তবে তিনি এও স্মরণ করিয়ে দিলেন, “‘ক্যাকটাস’-এর গান শুরুতেই কিন্তু মানুষ শোনেননি। অনেক পরে শুনেছেন। তখন ক্যাকটাস জনপ্রিয় হয়েছে। সে রকম আমাদের গানকেও সময় দিতে হবে। হয়তো ছ’মাস পরে মানুষ শুনবেন।”
তবে শুরু থেকেই কিছু-কিছু সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন গীতিকার মাহিকা মিত্র। এ গানের কথা লিখেছেন তিনি। গীতিকা বললেন, “প্রথম থেকেই ঠিক ছিল ‘হৃদ মাঝারে’ থাকবে। ‘হৃদ মাঝারে’ গানের কথা মাথায় রেখেই বাকি কথা লেখা হয়েছে। হৃদয়ের সঙ্গে আশা, স্বপ্ন, বেঁচে থাকার কথা জুড়েছি।”