সপ্তাহান্তের প্রথম ছুটির দিন সৈকত শহর দেখল ‘মুখ্যমন্ত্রীর জনসংযোগ’। হল ‘প্রশাসনিক বৈঠক’ও। বাস্তবে নয়, সবই সেলুলয়েডের শুটিংয়ে।
আন্তর্জাতিক আঙিনায় সমাদৃত হয়েছে রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্প। আর সেই প্রকল্প ও তার কারিগর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েই তৈরি হচ্ছে নতুন সিনামে ‘সুকন্যা’। পরিচালক উজ্জ্বল মিত্র। শনিবার থেকে সেই সিনেমার শুটিং শুরু হয়েছে সৈকত শহর দিঘাতে। মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর রাজ্য পুলিশের ডিজিপির চরিত্রে দেখা যাবে তৃণমূলেরই রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনকে।
প্রশাসনিক সফরে গিয়ে যে ভাবে রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক থেকে সাধারণ দোকানদারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা জনসংযোগ সারেন, প্রশাসনিক বৈঠক করেন সে সবই ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে। বিকেলে নিউ দিঘায় দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসনিক ভবনে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের দৃশ্য শুট করা হয়। শুটিংয়ের ফাঁকে সাংসদ শান্তনু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্প নেদারল্যান্ডে বিশ্ববন্দিত হয়েছে। এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মেয়ে উপকৃত হচ্ছে। এই যুগান্তকারী প্রকল্পকে কেন্দ্র করেই তৈরি হচ্ছে ‘সুকন্যা’।’’ চিকিৎসক থেকে রাজনীতি ঘুরে এ বার কি তাহলে অভিনয়? শান্তনুর জবাব, ‘‘এই জনমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি স্বপ্ন সফল হয়েছে। তাই পরিচালকের অনুরোধে ডিজিপির চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হয়েছি।’’ তবে গোটা সিনেমায় কোথাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ব্যবহার করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর নাম এখানে মায়া চট্টোপাধ্যায়।
সিঙ্গুর জমি আন্দোলন, তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতার অনশন— সবই রয়েছে এই সিনেমার গল্পে। গল্পের শুরু গ্রাম বাংলার এক অভাগী মায়ের যন্ত্রণা দিয়ে। বঞ্চনা, গঞ্জনা আর ছেড়া আঁচলের স্নেহে বড় হয়ে ওঠা সাধারণ মেয়ে দুর্গাকে ঘিরে কাহিনির সূত্রপাত। তৎকালীন বিরোধী নেত্রীর আন্দোলনে শামিল দুর্গার বাবা হঠাৎ একদিন উধাও হয়ে যান। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে কন্যাশ্রী প্রকল্পের হাত ধরেই বেড়ে ওঠে দুর্গা।
এ দিন দিঘায় শুটিংয়ের হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকও। তাঁরাও অভিনয় করছেন। জেলার কয়েকটি কলেজের শতাধিক পড়ুয়া ও কাঁথি শহরের একটি স্কুলের মেয়েরাও শুটিংয়ে যোগ দেয়। মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় থাকা অভিনেত্রী কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একেবারেই অনুকরণ করছি না। সেটা করা উচিত ও নয়। খুব ছোটবেলা থেকে একই পাড়ায় ওঁকে দেখে বড় হয়েছি। ওঁর মতো এত স্বতঃস্ফূর্ত আমি কাউকে দেখিনি। স্ক্রিপটে একই রকম ভাবে আমাকেও স্বতঃস্ফূর্ত হতে বলা হয়েছে।’’
কনীনিকা পেশাদার অভিনেত্রী। কিন্তু নেতা-মন্ত্রীরাও তো এ ছবিতে অভিনয় করছেন। কেমন লাগছে? সাংসদ শান্তনু, মন্ত্রী স্বপন থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি উত্তম এক সুরেই বলছেন, ‘‘নতুন অভিজ্ঞতা। খুব ভাল লাগছে। মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী প্রকল্প নিয়ে সিনেমায় অভিনয়ের অনুভূতিই আলাদা।’’ শুটিংয়ের সব কলাকুশলীই থাকছেন কাঁথিতে। তারপর গাড়িতে পৌঁছচ্ছেন শুটিংস্থলে।