(বাঁ দিকে) সোনাক্ষী সিন্হা ও জ়াহির ইকবাল। শত্রুঘ্ন সিন্হা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
গত কয়েক বছরে বার বার অভিযোগ উঠেছে, এ দেশে ক্রমশ বাড়ছে সাম্প্রদায়িক হিংসার সংখ্যা। ‘লভ জিহাদ’ নাম দিয়ে ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকে পড়ার চেষ্টাও চলছে বলে অভিযোগ। সেই আঁচ এই মুহূর্তে গিয়ে পড়ছে পটনার সিন্হা পরিবারে। অভিনেতা ও সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হার মেয়ে অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিন্হা সম্প্রতি বিয়ে করেছেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী জ়াহির ইকবালকে। বিয়ের ঘোষণা হওয়ার পরই নানা দিক থেকে সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে অভিনেত্রী ও তাঁর পরিবারকে। বিয়ের পর পটনায় একটি গোষ্ঠী ‘লভ জিহাদ’-এর ধুয়ো তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তার পরেই আসরে নামেন শত্রুঘ্ন। তাঁর সাফ জবাব, ‘‘আমার মেয়ে যা করেছে দেশের সংবিধান মেনে করেছে। নিজেদের কাজে মন দিন।’’
গত ২৩ জুন সোনাক্ষী সিন্হার বাবা শত্রুঘ্ন সিন্হা মা পুনম সিন্হা দাঁড়িয়ে থেকে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের এই খুশির মুহূর্তে শামিল হয়েছেন বলিউডের অনেকেই। যাঁরা উপস্থিত হতে পারেননি, তাঁরা শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। তবে শোনা যাচ্ছে, অভিনেত্রীর দুই দাদা লব ও কুশ সিন্হা নাকি অখুশি বোনের বিয়ে নিয়ে।
সোনাক্ষীর বিয়ে নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পটনার হিন্দু শিব ভবানী সেনা। রীতিমতো বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে পটনা শহরে। ‘লভ জিহাদ’-বলে চিহ্নিত করা হয়েছে অভিনেত্রীর বিয়েকে। সোনাক্ষীর বিয়ে নিয়ে নেটপাড়ার একাংশও ক্ষুব্ধ।
নিজেদের বিয়ের ছবি দিয়ে সমাজমাধ্যমে যে পোস্ট করেছেন অভিনেত্রী, তাতে নিন্দকদের কটাক্ষ, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ চলছিল। তার পরই বিয়ের পোস্টের মন্তব্য বিভাগ বন্ধ করে রেখেছেন সোনাক্ষী-জ়াহির।
এ বিয়েতে বাবার মত রয়েছে কি না, তা বার বার জানতে চেয়েছে সংবাদমাধ্যম। মেয়ে যে তাঁর ‘নয়নের মণি’ এ কথা বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন শত্রুঘ্ন। মেয়ের নিজের ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। এ বার নিজের শহর পটনায় মেয়ে সোনাক্ষীকে নিয়ে সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়ে কোনও ভুল কাজ করেনি। যা করেছে সংবিধান মেনেই করছে। যাঁরা এ সব করছেন, তাঁদের নিজের জীবন বলে কিছু নেই। আসল কোনও কাজ করুন জীবনে তাঁরা। এর বেশি কিছু বলব না।’’
যদিও সিন্হা পরিবারের অন্দরে নাকি চলছে চাপানউতর। বোনের বিয়েতে দুই দাদার অনুপস্থিতি চোখে পড়েছে অনেকেরই। এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর দাদা লব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘দু’টি দিন সময় দিন আমাদের। তার পরই আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব। আমি কিছু বলার মতো পরিস্থিতিতে পৌঁছে তবেই তো উত্তর দেব। প্রশ্ন করার জন্য ধন্যবাদ।’’ লবের এই মন্তব্যের পর থেকেই জল্পনা, তবে কি বোনের বিয়েতেই ইচ্ছাকৃতই থাকেননি লব-কুশ! তবে কি পারিবারিক কলহ চরমে উঠেছে সিন্হা পরিবারে?