গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিয়ের পর জমকালো রিসেপশন পার্টি। অতিথিদের মধ্যে তারকাদের চাঁদের হাট। কিন্তু কাঞ্চন মল্লিক ও শ্রীময়ী চট্টরাজের বিয়ের রিসেপশন পার্টিতে চোনা ঢেলেছে একটি নির্দেশিকা। যা নিয়ে বুধবার সকাল থেকেই টলিপাড়া সরগরম। অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনের বাইরের বোর্ডে লেখা ছিল ‘‘প্লিজ়, প্রেস অ্যান্ড পার্সোনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ড্রাইভার্স আর নট অ্যালাউড’। যে বাক্যের বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘‘দয়া করে সাংবাদিক, ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী এবং গাড়ির চালকের প্রবেশ নিষেধ।’’ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই নির্দেশিকাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক মহলের একাংশ সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জিতু কমল, শ্রীলেখা মিত্র, পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়-সহ টলিপাড়ার একাধিক বিশিষ্টজন এই প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে কাঞ্চন-শ্রীময়ীর ‘রুচি’বোধের সমালোচনা করেছেন।
ইন্ডাস্ট্রিতে কাঞ্চনের দীর্ঘ দিনের বন্ধু রুদ্রনীল ঘোষ। বুধবার বন্ধুর রিসেপশন পার্টিতে তিনি নিমন্ত্রিত ছিলেন। কিন্তু কাজের ব্যস্ততায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। অন্য দিকে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে রুদ্রনীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কিন্তু কাঞ্চনকে আমি যতটা চিনি, তাতে আমার মনে হয় এটা ওর কাজ না-ও হতে পারে। কারণ সাংবাদিকদের ও যথেষ্ট সম্মান করে। এমনকি এক সময়ে ওর গাড়িচালককেও দেখেছি কাঞ্চনের সঙ্গে একই খাবার খেতে।’’ রুদ্রনীলের মতে, বাঙালি পরিবারে বিয়ের অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সকলে মিলে নিয়ে থাকেন। তাই অজান্তে কারও তরফে এই ভুল হয়েও থাকতে পারে। রুদ্রনীল বললেন, ‘‘কাঞ্চনের এটা প্রথম বিয়ে নয়। তাই উপযাচক হয়ে কারও হয়তো মনে হতেই পারে যে এই বিয়েকে ঘিরে গসিপ হবে। দায়িত্ব নিয়ে ওই ব্যক্তি একটা বড় ভুল করে বসেছেন।’’
তবে এই ঘটনায় যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, তা মেটাতে কাঞ্চনের প্রকাশ্যে একটি বিবৃতি প্রকাশ করাই সঙ্গত হবে বলে মনে করছেন বন্ধু রুদ্রনীল। তিনি বললেন, ‘‘অনুষ্ঠান বাড়ির দায়িত্ব নিতে গিয়ে অন্য কারও ভুলের খেসারত কাঞ্চনকে দিতে হলে সেটা ঠিক হবে না।’’ আগামী দিনে যাতে এ রকম ঘটনা না ঘটে, তার জন্য আরও সাবধানতা অবলম্বন করাই যুক্তিযুক্ত বলে মনে করছেন রুদ্রনীল। বললেন, ‘‘এই ভ্রান্তিবিলাস কাঞ্চনের মস্তিষ্কপ্রসূত নয়। কিন্তু এর থেকে বাকিদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’’
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রাবন্তীও। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, ‘‘কাঞ্চনদাকে আমি ছোট থেকে চিনি। তিনি এ রকম কিছু করতে পারেন বলে আমার অন্তত মনে হয় না।’’ শ্রাবন্তী নিজে অনুষ্ঠানে কোনও ব্যক্তিগত দেহরক্ষী নিয়ে যাননি। কিন্তু অনুষ্ঠানে যে বেশ কয়েক জন দেহরক্ষী ছিলেন তা তাঁর চোখে পড়েছে। শ্রাবন্তীর কথায়, ‘‘আমি আধ ঘণ্টার জন্য গিয়েছিলাম। আমি কিন্তু দেখেছি কাঞ্চনদা এবং শ্রীময়ীর সুন্দর আতিথেয়তা। প্রত্যেককে সম্মান দিয়ে ওঁরা আপ্যায়ন করেছেন।’’ তবে শ্রাবন্তীও মেনে নিচ্ছেন যে ওই ধরনের কোনও নির্দেশিকা লেখা অনুচিত হয়েছে। শ্রাবন্তী বললেন, ‘‘জেনেবুঝে কাঞ্চনদার মতো সুন্দর একটা মানুষ এই ভুল করতে পারেন না। এটা নিশ্চয়ই অন্য কেউ করেছেন।’’