ঋত্বিক চক্রবর্তী -ফাইল চিত্র
বড়দাকে ভড়কে দিচ্ছে তারই হাতের পুতুল। পুতুলকে যা করতে বলা হবে সে তো তা-ই করবে। কিন্তু এখানে বিষয়টা উল্টো। না, কোনও সিনেমা নয়, শখেই ‘বড়দা’ হয়েছেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। তাঁর হাতের পুতুল যা খুশি তা-ই বলে ও করে চলেছে, সবটাই নাকি এখন হাতের বাইরে।
মাস কয়েক হল, প্রায়ই সেই বেলাগাম পুতুল নিয়ে হাজির হন ঋত্বিক। দর্শক তৈরি হয়ে গিয়েছে প্রথম দিন থেকেই। যেন এক আজব খেলা! কোন দিন পুতুল যে কী বলে উঠবে, আগে থেকে ধারণা করা যাবে না। ঋত্বিক নিজেও নাকি জানেন না! ব্যাপারটা কী? আনন্দবাজার অনলাইন কৌতূহল প্রকাশ করেছিল ‘বড়দা’র কাছে।
অভিনেতা বললেন, ‘‘করতে ভাল লাগে, তাই করি। টাইম পাস। অত গুরুত্ব দেওয়ার মতো বিষয়ই নয়। টিপ্পনী বলা যায়। কেউ বোঝেন, কেউ বোঝেন না। আর বোঝার মতো তেমন কিছু বলেও না তো পুতুল। আবার হয়তো বলেও।’’ তবে সে কথার দায় ঋত্বিক নিতে রাজি নন। ওগুলো তো আর তাঁর কথা নয়, পুতুলের কথা।
কী বলে সেই হাতের বাইরে যাওয়া হাতের পুতুল? বৃহস্পতিবার হাতের পুতুল নিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন ঋত্বিক। পুজোর পর এই প্রথম। পুতুলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি নোবেল প্রাইজ় পাইনি, এটা কিন্তু সত্যি কথা নয়। সত্যি কথা হল নোবেল আমাকে পায়নি। যেমন লোকে ভাবে আমি হাতের পুতুল, আসলে আমি একটা পুতুলের হাত।’’ ঋত্বিক চট করে প্রশ্ন করেন, ‘‘তা হলে পুতুলটা কে?’’ উত্তর না দিয়ে পরের প্রসঙ্গে চলে যায় হাতের পুতুল। বলতে থাকে, ‘‘ডলারকে আমি তাড়াইনি বড়দা, টাকা তাড়িয়েছে।’’ সে আবার কী? প্রশ্ন করতে এ বারও ঋত্বিককে জবাব না দিয়ে সততার প্রতীক নিয়ে কথা বলে ওঠে পুতুল। শেষে অভিনেতার গালে চুমু খেয়ে সাদা বাঘ বিদায় নেয়।
অভিনেতা জানালেন, তিনি ভেন্ট্রিলোকুইস্ট নন। অত ভাল করে পতুলের মুখ দিয়ে তৎক্ষণাৎ কথা বলে উঠতে পারেন না এখনও। তবে পছন্দ করেন। তাই আলাদা করে দুটো কণ্ঠ রেকর্ড করেন। তার পর ভিডিয়ো আকারে আপলোড করেন। জানালেন, ছেলের জন্য কেনা সাদা বাঘ তাঁর হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছে আপাতত। তবে নিজের আরও হাত-পুতুল রয়েছে তাঁর।
এর আগে নানা প্রসঙ্গে বেফাঁস কথা বলতে দেখা গিয়েছে ঋত্বিকের হাতের পুতুলকে। কখনও সে সিনেমার রিভিউ দিতে এসে বলেছে, ‘‘এক ছিলিম, দুই ছিলিম, তিন ছিলিম, ফিচার ফিলিম।’’ আবার কখনও বাতলেছে ব্যবসায়িক বুদ্ধি। চায়ের দোকান খুলে শামুকের খোলে চা পরিবেশন, সঙ্গে পিঁপড়ের ডিমের অমলেট। কিংবা মনিহারির দোকানে পানিফলের দুল, পদ্মপাতার জাঙ্গিয়া। দর্শক চিন্তায় পড়ে যাচ্ছে। এ সব কী? রাজনৈতিক মতামত? না কি...
ঋত্বিকের সাফ জবাব, ‘‘শুধু রাজনীতি কেন? চারপাশে যা হচ্ছে, সমাজে যা হচ্ছে, তাই নিয়েই কথা বলছে পুতুল। কাল কী বলবে, আমি তো জানি না। ও আর আমি এক না কি?’’
যদি রোদ্দুর রায়ের মতো হাজতে যেতে হয়? জিজ্ঞেস করতেই হাসতে শুরু করলেন ঋত্বিক। বললেন, ‘‘না না, অত বড় কিছু করছি বলে মনে হয় না। অত দূর যাবে না। নিরীহ বিষয়।’’