Review of Ram Setu

গল্পের গরু ‘রাম সেতু’তে চড়ে, কিন্তু তাতে অক্ষয় কুমারের কী!

অক্ষয় কুমার কিন্তু বেশ ভালই আছেন। বছরে পাঁচটা ছবি— পাঁচটা ভিন্ন বিষয়, পাঁচটা লুক! ছবি চলুক বা না চলুক, পারিশ্রমিকের গড় ঠিক থাকলেই তো হল।

Advertisement
অভিনন্দন দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২২ ১৬:০৯
কেমন হল অক্ষয়ের ‘রাম সেতু’?

কেমন হল অক্ষয়ের ‘রাম সেতু’? ছবি- সংগৃহীত।

রাম সেতু ছবির একটি দৃশ্যে অক্ষয় কুমারের উদ্দেশে নুসরত ভারুচা বলেন, ‘‘মামলার রায় যা-ই হোক না কেন, শ্রীরাম কিন্তু তোমার চেয়ে ভাল আইনজীবী পাবেন না!’’ আশা করা যায়, এর পর ‘রাম সেতু’ নিয়ে খুব বেশি শব্দ খরচ করার প্রয়োজন হবে না।

ছবির শুরুতেই দর্শককে সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে, ছবির গল্প ‘কাল্পনিক’। তা বেশ। সেই কল্পনার জাল বুনতে বুনতে পরিচালক অভিষেক শর্মা এমনই এক গল্প ফেঁদেছেন যা দেখতে বসে মাথাব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। এই ছবির গল্পের গবেষক আবার চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদী, যিনি অক্ষয়কে নিয়েই হালে পরিচালনা করেছিলেন ‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’ ছবিটি! নির্মাতারা জানেন, তাঁরা কী তৈরি করছেন এবং কেন তৈরি করছেন। ব্যস, তাঁদের তো দায়িত্ব শেষ। এ বারে দর্শকের না হয় শুরু থেকে শেষ পুরোটাই অনুমানযোগ্য একটা গল্প ঠুসে দেওয়া যাক, ক্ষতি কী!

Advertisement

গল্পের প্রেক্ষাপট ২০০৭। ভারত-শ্রীলঙ্কার মধ্যবর্তী জলভাগে অবস্থিত ‘রাম সেতু’। এক জাহাজ ব্যবসায়ী চাইছেন রাম সেতুকে ভেঙে ফেলতে, যাতে জাহাজ চলাচল আরও দ্রুত হয়। অন্য দিকে ধর্মকে বলি দিয়ে ‘উন্নয়ন’ চাইছে না বিরোধী পক্ষ। অগত্যা এই সেতু প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্ট, না কি ‘রামায়ণ’-এর রামচন্দ্রের হাতে তৈরি, তা প্রমাণ করতে মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। সেতুর সত্যতা যাচাই করার দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রত্নতাত্বিক আরিয়ান কুলশ্রেষ্ঠর (অক্ষয়) উপর। আপাতত এটুকুই থাক। বাকিটা না জানলেও কোনও ক্ষতি নেই।

ছবির একটি দৃশ্য।

ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

অক্ষয় কুমার কিন্তু বেশ ভালই আছেন। বছরে পাঁচটা ছবি— পাঁচটা ভিন্ন বিষয়, পাঁচটা লুক! ছবি চলুক বা না চলুক, পারিশ্রমিকের গড় ঠিক থাকলেই তো হল। এই ছবিতে চোখে চশমা, মাথায় পরচুলা, পাকা দাড়ি নিয়ে তাঁর লুকটি মন্দ নয়। তবে অভিনয়ে নতুন কিছু পাওয়া গেল না। আসলে কম সময়ে সারা বছরের শুটিং টার্গেট শেষ করতে হলে এর বেশি সময় হয়তো তিনি পরিচালককে দিতেনও না!

ছবিতে অক্ষয়ের স্ত্রীর ভূমিকায় রয়েছেন নুসরত ভারুচা (গায়ত্রী)। চরিত্রটি সাহিত্যের অধ্যাপক। তাই স্বামীর মিশনে কিছু মুখস্থ সংলাপ বলা ছাড়া তাঁর বিশেষ কিছু করার ছিল না। জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকে (স্যান্ড্রা) একটাই কথা বলার— আরোপিত সংলাপ বলার কায়দার ভারে তিনি অভিনয়টা যে কখন করবেন, মনে হয় বুঝতে পারেননি। জঙ্গল, সমুদ্রে দৌড়ঝাঁপ করার পরেও তাঁর মেক আপ অক্ষত! ছবির ‘দুষ্টু লোক’ জাহাজ ব্যবসায়ী ইন্দ্রকান্ত। এই চরিত্রে নাসারের মতো শক্তিশালী অভিনেতাকে ব্যবহার করতে পারেননি পরিচালক। বরং টুরিস্ট গাইডের চরিত্রে স্বল্প পরিসরে দর্শকমনে জায়গা করে নেন তামিল অভিনেতা সত্যদেব কাঞ্চরণ।

হলিউডে ‘ট্রেজার হান্ট’ ঘরানার ছবির সাফল্যের পিছনে একটা বড় কৃতিত্ব থাকে সেট ডিজাইনিং এবং ভিএফএক্স-এর উপর। সেখানে ‘রাম সেতু’র ভিফএক্স রীতিমতো মধ্যমানের। অসীম মিশ্রর ক্যামেরা আরও ভাল হতে পারত। এখন প্রশ্ন ‘রাম সেতু’ না দেখলে দর্শক কি দারুণ একটা ছবি দেখার সুযোগ হাতছাড়া করবেন? নিশ্চয়ই নয়। এই বছর তো শেষ হতে চলেছে। আগামী বছরেও একগুচ্ছ ছবি নিয়ে আসবেন অক্ষয়। তিনি তো আবার থামতে জানেন না! প্রশ্ন হচ্ছে আর কত দিন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement