শোলাঙ্কি রায়।
প্রেম করা শুরু করতেই নববর্ষে অন্য রোমাঞ্চ তৈরি হল। নতুন শাড়ি পাব। বেশ একটা লজ্জা ও প্রেম মেশানো ব্যাপার-স্যাপার। সেই শাড়ি পরে রেস্তরাঁয় খেতে বেরনো একসঙ্গে! শাড়ি পরতে আমি ভালবাসি সব সময়ে। তবে প্রেমিকের থেকে পাওয়া শাড়ি পরার মজা অন্যই! ছুটির দিনটা ভালই কাটত। যদিও সেই শাড়িগুলোর এখন আর অস্তিত্ব নেই আমাদের বাড়িতে। দানছত্রে দিয়ে দিয়েছি। আমার থেকে ‘রিলিফ’ পেয়ে অন্য কারও ‘রিলিফ’-এ (ত্রাণ) কাজে লেগেছে। তার মধ্যে একটি কয়েক বছর আগে পর্যন্তও আমার কাছেই ছিল।
ছোট থেকে ১ জানুয়ারিকেই নতুন বছর হিসেবে দেখতাম। স্কুলে সেই রীতির চল ছিল বেশি। ঔপনিবেশিক চেতনার প্রভাব আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। কিন্তু পয়লা বৈশাখের মূল্য কোনও দিন কমেনি, এটাও ঠিক। নতুন বছর হিসেবে তার মর্যাদা যতটা না, তার থেকে বেশি বাঙালির ১৩ পার্বণের একটি! সে ভাবেই পালন করতাম আমরাও।
পয়লা বৈশাখ আসলে খুব ঘরোয়া এক উৎসব ছিল ছোট থেকেই। ঘরে ঘরে পালন হত বৈশাখ মাসের প্রথম দিনটা। সম্ভবত আজও হয়, কিন্তু আমার জীবনে এ দিনটা ভীষণ কাটখোট্টা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে মিশে গিয়েছে প্রতিটা উৎসব। কোনও বড় অনুষ্ঠান হয়, সেজেগুজে যাই। শ্যুট না থাকলেও পেশাদার পয়লা বৈশাখ কাটাই এখন। সেই রোমাঞ্চটা নেই।
মনে আছে, ভাই-বোনেরা মিলে জামা গুনতে বসতাম। কে ক’টা পেয়েছি! সব থেকে বেশি মজা হত এটা ভেবে যে, পুজো ছাড়াও আরও একটা উৎসব, যাতে আমরা জামা উপহার পেতাম। মা প্রতি বছর আমাকে কিছু না কিছু একটা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আজও। ছোট থেকে মায়ের উৎসাহেই নতুন পোশাক পরার চল শুরু বাড়িতে। আমিও সেই রীতি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। সে দিনে বিশেষ কিছু না করলেও পোশাকটা নতুন পরি।
এ ছাড়া রান্না করতে ভালবাসি আমি। বিশেষ করে বাসন্তী পোলাও আর মটন কষা। আসলে নিজে এটা ভালবাসি বলে অন্যকেও এটাই খাওয়াতে চাই। নিজের পেটপুজোকে খুব গুরুত্ব দিই আমি। নববর্ষে একটু আধটু রান্না করতে ভালই লাগে। এ বারে কী করব জানি না, তবে নতুন পোশাক তো পরবই।